ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ১৫ বছরের অন্যায়ের পাহাড় ভাঙার সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। তিনি বলেছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি সম্ভাবনাময় মানবসম্পদ ভাণ্ডর, যা কাজে লাগিয়ে তরুণ প্রজন্মকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়ে মানবসম্পদে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ঢাকার আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের মধুমতি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ওমেন অ্যান্ড গোল্ডেন সিটিজেন ট্রেড ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এই উৎসব ৪ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় সানরাইডার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং সমাজসেবা অধিদফতরের পৃষ্ঠপোষকতায়। এতে সভাপতিত্ব করেন সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন, প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ দেবনাথ, জুলাই শহিদ মুগ্ধের ভাই মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও জুলাই কন্যা সাবরিনা আফরোজা সেবন্তী।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘২০২৪ সালের ৪ জুলাই এক ঐতিহাসিক দিন ছিল। সেদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্র-তরুণেরা রাস্তায় নেমেছিল, দেশের মানুষের পায়ের নিচের মাটি কেঁপে উঠেছিল। এই অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘ ১৫ বছরের অন্যায়ের পাহাড় ভাঙার সূচনা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা কুটিল রাজনীতি বোঝে না, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ভবিষ্যতেও যদি অন্যায় হয়, তারা রুখে দাঁড়াবে। কারণ, তারুণ্য কখনও অন্যায়কে মেনে নেয় না।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাঠামোগত ত্রুটির কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা কাঠামোগত পরিবর্তন এনেছি। ফলে এখন প্রান্তিক মানুষের কাছে ভাতা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ন্যায় ও সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন মূল্যবোধের সূচনা দরকার, আর তা আমাদের কর্মক্ষেত্র থেকেই শুরু করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে হুইলচেয়ারে আসা প্রতিবন্ধীদের ফ্যাশন শো ও শিশু প্রতিবন্ধীদের দলীয় নৃত্য উপভোগ করেন উপদেষ্টা। ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধনের পর তিনি ৩০টিরও বেশি স্টল পরিদর্শন করেন। আয়োজনের অংশ হিসেবে রয়েছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিযোগিতা ও প্রতিদিন নারী ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিষয়ে সেমিনার।
বিকেলে উপদেষ্টা টঙ্গীর এরশাদনগরে গিয়ে জুলাই যুদ্ধে শহিদ নাফিসা হোসেন ও সানজিদা হোসেনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং কবর জিয়ারত করেন। পরে উত্তরায় শহিদ নাইমা সুলতানার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার গুলিবিদ্ধ স্থান পরিদর্শন করেন এবং তার মায়ের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।