Sunday 06 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৬ জুলাই ২০২৫ ১২:৫৯

ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন রাজনীতিতে চমক জাগিয়ে টেসলা ও স্পেসএক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তিক্ত বিরোধের কয়েক সপ্তাহ পর, মাস্ক এ ঘোষণা দেন যে তিনি ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল চালু করেছেন।

ইলন মাস্ক বলেছেন, এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দুই-দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করবে। তবে দলটি মার্কিন ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের (এফইসি) কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

মাস্ক যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাই তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। তিনি বলেননি এই নতুন দলটির নেতৃত্বে কে থাকবেন।

বিজ্ঞাপন

ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার সময় মাস্ক প্রথম নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দেন। সেই সময় তিনি ‘এক্স’-এ একটি জরিপ চালান, যেখানে তিনি অনুসারীদের জিজ্ঞাসা করেন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল হওয়া উচিত কি না।

শনিবারের (৫ জুলাই) পোস্টে মাস্ক সেই জরিপের কথা উল্লেখ করে লেখেন, ‘দুই অনুপাতে এক ব্যবধানে, আপনারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল চান, আর তাই আজই গঠিত হলো আমেরিকা পার্টি নামে। আমাদের দেশকে অপচয় ও দুর্নীতিতে দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন একদলীয় ব্যবস্থায় বাস করি, গণতন্ত্রে নয়। আজ আমেরিকা পার্টি গঠিত হয়েছে আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে।’

তবে শনিবার পর্যন্ত, ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো দলীয় নিবন্ধনের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

মার্কিন রাজনীতিতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের বাইরে থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ দেখা গেলেও, জাতীয় পর্যায়ে সেগুলো খুব কমই সফলতা পায়। লিবারটারিয়ান পার্টি, গ্রিন পার্টি ও পিপলস পার্টির মতো দলগুলো বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী দিলেও ট্রাম্প বা তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে আটকাতে পারেনি।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্ক এক সময় ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেন। এমনকি ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনে মাস্ক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন।

নির্বাচনের পরে মাস্ককে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই)-এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যার কাজ ছিল ফেডারেল বাজেটে বড় ধরনের কাটছাঁট নির্ধারণ করা।

তবে মে মাসে প্রশাসন ত্যাগ করে ট্রাম্পের কর ও ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করার পর থেকে তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত একটি বিতর্কিত আইন সম্প্রতি কংগ্রেসে পাশ হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট সই করেছেন, যা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেটে অতিরিক্ত ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই আইনটিতে টেসলার মতো সবুজ প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানির জন্য কোনো বিশেষ সুবিধা না থাকায় মাস্ক ক্ষুব্ধ হন। ট্রাম্প পরে ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লেখেন, ‘ইলন সম্ভবত মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পেয়েছেন। যদি এসব ভর্তুকি না থাকতো, তাহলে হয়তো তাকে সব ব্যবসা গুটিয়ে আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো।’

উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক বর্তমানে স্পেসএক্স এবং স্টারলিংকের মালিক, যা মার্কিন ও ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য রকেট উৎক্ষেপণ ও স্যাটেলাইট সেবা প্রদান করে।

সারাবাংলা/এনজে

ইলন মাস্ক ট্রাম্প দল গঠন নতুন রাজনৈতিক দল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর