পঞ্চগড়: ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পঞ্চগড় জেলার বোদা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি। বোর্ড থেকে প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার বোদা উপজেলার ময়দান দিঘী দাখিল মাদরাসা, মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসা, কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা এবং ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া দাখিল মাদরাসা। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থীই পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়েছে।
সূত্রমতে জানা গেছে, ময়দানদিঘী মাদরাসা থেকে ২৪ জন, মুসলিমপুর মাদরাসা থেকে ১০ জন, কুড়ালীপাড়া মাদরাসা থেকে ৪ জনের মধ্যে ৩ জন, ডাবরভাঙ্গা বিদ্যালয় থেকে ১০ জন এবং তেঁতুলিয়া মাদরাসা থেকে ১৬ জনের মধ্যে ৮ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে কেউই উত্তীর্ণ হয়নি।
ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট মুসলিমুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসে না। তাদের ফরম পূরণ করতেও অনীহা ছিল। আমি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফরম পূরণ করিয়েছি।
ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘এবারের ব্যাচটা একটু দুর্বল ছিল। এজন্য এই ফলাফল।’
মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসার সুপার মকবুল হোসেন প্রধান বলেন, ‘ছাত্ররা পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী নয়। বেশিরভাগ সময় মোবাইল ও সাইকেল নিয়ে ব্যস্ত থাকে।’
এমপিওভুক্ত না হওয়ায় কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির সুপারিনটেনডেন্ট নুর নবী। তিনি বলেন, অনেক ছাত্রী বিয়েও করে ফেলেছে। নিয়মিত উপস্থিতি না থাকার কারণে ফল খারাপ হয়েছে।
এ বিষয়ে বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করবো। প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খায়রুল আনাম মো. লজআফতাবুর রহমান হেলালী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে, সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেলার মোট পরীক্ষার্থী এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ফল শূন্য হওয়ায় স্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি, শিক্ষকদের সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত সমস্যা এবং অভিভাবকদের অনাগ্রহ৷ সব মিলিয়েই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।