রাজধানীর মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে শত মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ কর্মসূচি।
রাজবাড়ী:
মিটফোর্ডে যুবদল নেতার হাতে ব্যবসায়ী খুন এবং খুলনায় যুবদল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সাধারণ জনগণ ও রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পান্না চত্বর হয়ে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার মুখপাত্র হাসিবুল ইসলাম শিমুল, যুগ্ন আহ্বায়ক মাহাদি রাকিবুল ইসলাম, এনসিপির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিক্ষার্থী তাহসিন আতিয়ার বিন তামিম প্রমূখ বক্তব্য দেন। এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর মাহমুদ সুজন, যুগ্ম সদস্য সচিব সাঈদুজ্জামান সাকিব, ইসলামী আন্দোলন রাজবাড়ী সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি আব্দুল আলীম সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন,’পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের সড়কে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্যে একজন সাধারণ মানুষকে হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া খুলনাতে যুবদল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকের এই দিন দেখার জন্য কি আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম? এখন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ড চলছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে আমরা মর্মাহত। ছাত্রজনতা প্রয়োজনে আবারো রক্ত দেবে, কিন্তু এই বাংলায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না।’
তারা আরও বলেন, এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার না হলে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য আরও বাড়বে। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গোপালগঞ্জ:
ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং দেশব্যাপী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন অনুষদের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
স্লোগানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল— “আমার সোনার বাংলায়; খুনিদের ঠাঁই নাই”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”, “এক দুই তিন চার; চাঁদাবাজ দেশ ছাড়”, “চাঁদাবাজের ঠিকানা; এই বাংলা হবে না”, এবং “জনে জনে মানুষ মরে; ইন্টেরিম কী করে?”
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বলেন, “অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।”
মানববন্ধন শেষে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
নীলফামারী:
রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে নীলফামারীর ডোমারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ জনগণ।
নব জাগরণ ডোমার এবং হৃদয়ে ডোমার ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সকাল ১১টার দিকে ডোমার বাজার রেলগেট সংলগ্ন প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন হাতে কর্মসূচিতে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সোহাগ হত্যার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আবু সাঈদ তার বক্তব্যে বলেন, “একজন মানুষ কতটা নিকৃষ্ট হলে নিরীহ কাউকে চাঁদার জন্য পাথর মেরে হত্যা করতে পারে! ২৪-এর গণ-আন্দোলনে সবাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল। এবার নামতে হবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। নতুন বাংলাদেশ এখনো এক বছর হয়নি, এরইমধ্যে ১৫০টির বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে—এ থেকেই স্পষ্ট, যারা এখনই লোভ ও দম্ভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা ক্ষমতায় গেলে দেশ নিরাপদ রাখতে পারবে না। ২০২৫ সালে প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা বর্বরতার চূড়ান্ত। কর্মই মানুষের পরিচয়, দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে শিখতে হবে। অন্যথায় ৯০-এর মতো আবারও গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবে।”
ছাত্র প্রতিনিধি অর্ণব আল আলিফের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন, শ্রমিক নেতা সোহেল রানা, মুফতি মহিউদ্দিন জুলফিকার, ইসলামি বক্তা আবু সাঈদ, কামরুল ইসলাম আরেফী, ছাত্র প্রতিনিধি মাহির মোহাম্মদ মিলনসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
ঠাকুরগাঁও:
রাজধানীর মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠ থেকে ছাত্রজনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের চৌরাস্তায় এসে এক ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘পুরান ঢাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই চাঁদাবাজরা দেশটাকে অস্থিতিশীলতায় পরিণত করেছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর এরা কিভাবে চাঁদাবাজি করে। কিভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। স্বাধীন দেশে এদের কোনো স্থান নেই।’
চাঁদাবাজদেরসহ সকল দলের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করে বক্তারা আরও বলেন, ‘এ স্বাধীন দেশে এ ধরণের কর্মকান্ড চলতে থাকলে আপনাদের অবস্থাও সেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের মতো হবে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি, সেখানে এ ধরনের বর্বরতার কোনো স্থান নেই।’
অন্যদিকে, একই ঘটনার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে চৌরাস্তায় এসে ঘন্টাব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
মুন্সীগঞ্জ:
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) যুবদল কর্মী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পিটিয়ে,পাথর নিক্ষেপ ও কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ইসলামী আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখা।
শনিবার দুপুরের দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এই চার সংগঠনের নেতা কর্মীরা ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ মানববন্ধ করেন।
এ সময় বিক্ষোভে ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে ও বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, এক যুবদল নেতা আরেক যুবদল কর্মীকে যেভাবে পাথর দিয়ে মেরেছে। এটা আইয়ামে জাহেলিয়াতকে হার মানিয়েছেন। অভিযুক্ত মাহিন ও রবিনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
তারা আরও বলেন, ‘পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপরাধীদের রক্ষা করার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মুন্সীগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহ্বায়ক জাকারিয়া, যুগ্ম সদস্য সচিব ফারদিন হাসান আবির, নোমান আল মাহমুদ।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ হাবীবুর রহমান বিক্রমপুরী, সদর উপজেলা সভাপতি মো. কাউসার হামিদী, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ইব্রাহীম খলিল,জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক গাজী আলিম, জেলা যুগ্ম সম্নয়কারি ফারজানা আক্তার। ইসলামী ছাত্র আন্দোলের সদস্য সচিব মুজাহিদুল ইসলাম জান্নাতুল ও মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক সাফিল আস সামী।
পরে মানববন্ধন শেষ করে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয় মিছিলটি সুপারমার্কেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
ময়মনসিংহ:
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল গেইটের সামনে নৃসংসভাবে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত এই ন্যাক্কারজনক এবং পৈশাচিক হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে নতুন করে ফ্যাসিবাদ সৃষ্টির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সিলেট:
রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ফটকে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা এবং দেশব্যাপী চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্যকর কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন শত শত শিক্ষার্থী রাত ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হল থেকে মিছিল শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু হলে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর চাঁদাবাজ নো মোর’, চাঁদাবাজদের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না; যুবদলের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, এ্যাকশন এ্যাকশন ডাইরেক্ট এ্যাকশন, যুবদলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট এ্যাকশন, দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায় ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন রাতের ক্যাম্পাস।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবির আহ্বায়ক পলাশ বখতিয়ার, সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম, সমন্বয়ক আজাদ শিকদার।
এ সময় আহ্বায়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে লাশের উপর নৃত্য করেছিল। এখন বিএনপির একটি অঙ্গ সংগঠন সেটি ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলে, কারা ক্ষমতায় আসবে এটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদেরকে আমরা ফিরিয়েু আনতে চাই না।’
বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র নেতারা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি, করবেও না। দেশের প্রতিটি কোণে শান্তি, ন্যায়বিচার এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’
কুষ্টিয়া:
ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল এলাকায় সোহাগ নামে এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া পৌর শাখা।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় শহরের বড়বাজার এলাকা থেকে মিছিলটি বের করে শহরের মজমপুরে মজমপুরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন দলটির নেতারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘স্বাধীন বাংলার একজন নাগরিককে পাথর নিক্ষেপ করে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে এটি জাতির কাছে স্পষ্ট। তারা মানুষটিকে হত্যাই করে নাই, নিহতের লাশের উপর দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছে। এটা আইয়েমে জাহেলিয়াতের চিত্র। বাংলাদেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ এই খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।’
এছাড়াও সমাবেশ থেকে দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া পৌর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়ার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী, সেক্রেটারি জিএম তাওহীদ আনোয়ারসহ দলটির বিভিন্ন পযার্য়ের নেতারা।
অন্যদিকে রাজধানীতে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কুষ্টিয়া পৌর চত্বর থেকে মশাল মিছিল বের করে প্রতিবাদী ছাত্র-জনতা। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বড়বাজার এলাকায় সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় ছাত্র-জনতা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আমরা ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘চাঁদাবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘দিল্লি না ঢাকা’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তারা বলেন, চাঁদার টাকার জন্য একজন ব্যবসায়ীকে পাথর নিক্ষেপ করে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে এটি জাতির কাছে স্পষ্ট। হত্যার পর মধ্যযুগীয় কায়দায় নিহতের লাশের উপর নিত্য করেছে। এটা দুঃখজনক। বাংলাদেশের মানুষ এই খুনিদের বিচার চায়। তাই অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় ছাত্র-জনতার মশাল মিছিল। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুর:
মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যাসহ সারাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ ছাত্র-জনতা। এ সময় তারা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে হুঁশিয়ারি দেন।
শনিবার বিকেল ৫টায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে শহরের সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ব্রাহ্মসমাজ সড়ক ও প্রধান সড়ক হয়ে ফরিদপুরে প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এসে শেষ করেন। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বক্তব্যকালে ঢাকার মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার বর্ণনা তুলে ধরেন বক্তারা। এ সময় জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহেল রানা বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ে আমরা রক্তের গন্ধ পাচ্ছি। ২৪ পরবর্তী বাংলায় যারা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস বা স্বৈরাচার হওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের এই বাংলা থেকে ছাত্র-জনতা রুখে দিবে। আপনারা মনে রাখবেন, বিগত সরকারের যেভাবে পতন হয়েছে তার চেয়ে ভয়ংকরভাবে আপনাদের পতন হবে৷’ এছাড়াও অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানায় তারা।
লালমনিরহাট:
ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডসহ দেশজুড়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে লালমনিরহাটে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লালমনিরহাট জেলা শাখা।
শনিবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলা শহরের মিশনমোড় চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে এলাকা থেকে শুরু হয়ে মিশন মোর চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। এতে বক্তব্য দেন জাতীয় ওলামা দলের মাশায়েক আইমমা পরিষদের লালমাইহাট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ইব্রাহিম খলিল্ ওলামা পরিষদ লালমনিহাট জেলা শাখার স্বেচ্ছাসেবক কমান্ডার হাফেজ সুলতান মাহমুদ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লালমনিরহাট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হযরত মাওলানা রমজান গাজী এবং ওলামা পরিষদ লালমনিহাট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আব্দুস সামাদ তালাবি।
এর আগে, একই দাবিতে মিশন চত্বরে মানববন্ধন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলনের নেতারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
ঢাকায় ব্যবসায়ী লাল চাঁন ওরফে সোহাগকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
শনিবার বিকেলে সচেতন নাগরিকদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
শহরের শান্তি মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী শাসন আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘চাঁদা না দেওয়ায় অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করে সোহাগকে। বিএনপির সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের শুধু দল থেকে বহিস্কার নয়, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি বক্তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিরও সংস্কারের দাবি তোলেন।’