সন্দেহ হলেই পিটিয়ে পুলিশে দিচ্ছে ছাত্রলীগের বাইক বাহিনী
২ জুলাই ২০১৮ ১৬:৫০
।। কবির কানন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাবি: সন্দেহ হলেই ধরে পিটিয়ে থানায় সোপর্দ করছেন। তাদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না মেয়েরাও। তারা ছাত্রলীগের বাইক বাহিনী। গত শনিবার বিকেল থেকে তারা বাইকে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এভাবেই মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।
ছাত্রলীগের এই বাইক বাহিনী শনিবার থেকে সোমবার (২ জুলাই) পর্যন্ত অন্তত ১০ ছাত্র-ছাত্রীকে পিটিয়ে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছেন। সোমবার সকালে শহীদ মিনারে তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুককে পিটিয়ে থানায় সোপর্দ করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এমন একজন ছাত্রীকেও বিশ্ববিদ্যারলয়ের টিএসসি থেকে ধরে থানায় সোপর্দ করেছে বলে জানা গেছে।
সবশেষ সোমবার বিকেল তিনটার দিকে ছাত্রলীগ বাইকে করে মহড়া দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা হাসপাতালের বাইরে বাইক রেখে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশেরও চেষ্টা করেন। এ সময় হাসপাতালের গেটের আনসার সদস্যরা তাদের প্রবেশে বাধা দিলে তারা ফিরে আসেন। হাসপাতালের সামনে একসঙ্গে অতগুলো বাইক দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
বাইক বাহিনীর নেতৃত্বে আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাকিব হাসান সুইম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মোহাম্মদ নিজামুল হক, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, আইন বিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, স্কুল কার্যক্রম বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন। প্রচার সম্পাদক সাইব বাবু। এ ছাড়া এই দলে আছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হলের সাধারণ সম্পাদক আল আমীন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, কবি জসিম উদ্দিন হলের সভাপতি আরিফ হোসেন, জহুরুল হক হলের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, জগন্নাথ হলের সাধারণ সম্পাদক উৎপল দাস।
বাইকে মহড়ার বিষয়ে মহড়ারতদের একজন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কিছু শিক্ষার্থী ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের প্রতিহত করছি।
মোস্তফা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন, ‘এভাবে মহড়া দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আতঙ্কিত করা গণতন্ত্রপরিপন্থী। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা আছে কি-না এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘যারা কোটা আন্দোলনের নামে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র এবং শান্ত ক্যাম্পাসকে অশান্ত করতে চায় তাদের প্রতিহত করার জন্য কাজ করব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি তো কোটার ব্যাপারে সমাধান দিয়েই দিয়েছেন।’
এ ছাড়া ছাত্রলীগ তাদের মারধর করতে পারে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ মারবে কেনো? ওরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে।’
আরও পড়ুন-
ঢাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও ছাত্রলীগ, কর্মসূচি পণ্ড
সারাবাংলা/কেকে/এমআই