ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে রাজধানীতে রিকশা র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার অংশ নিয়েছেন। তিনি জুলাই কন্যাদের ইতিহাসের গর্ব বলে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে রিকশা র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি খামারবাড়ি, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, আগারগাঁও, শিশুমেলা হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে এসে বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হয়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই র্যালির আয়োজন করেছে।
র্যালির শুরুতে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সাহসী নারীদের আমরা ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে দেব না। যতবার এ দেশে অন্যায় হবে, অবিচার হবে, ততবার জুলাইয়ের জন্ম হবে— জুলাই কন্যারা প্রতিবার ধেয়ে ধেয়ে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই কন্যারা আমাদের অনুপ্রেরণা। তোমরা তোমাদের শক্তিময় রূপে এই জুলাইতে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছো। জুলাই মানে অত্যাচারীর অবসান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। আমরা আর ভয় পাবো না। যতবার অন্যায় হবে, ততবার জুলাই ফিরে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা নারী ও শিশু নির্যাতনমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছি। এই পথচলায় ‘জুলাই কন্যা’রা আমাদের অগ্রসৈনিক। তোমাদের সাহস, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এই দেশে যতদিন অন্যায় থাকবে, ততদিন ‘জুলাই কন্যারা’ বারবার ফিরে আসবে।”
সমাবেশে উপদেষ্টা উপস্থিত সবাইকে ‘জুলাই কন্যা শপথ’ পাঠ করান। শপথে দারিদ্র্যমুক্ত, সহিংসতামুক্ত, মানবিক, সাম্য ও মানবাধিকারভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার উচ্চারণ করা হয়। শপথে বলা হয়—‘সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নয়, আদিবাসী-অনাদিবাসী নয়, নারী-পুরুষ নয়, আমরা সবাই নাগরিক। ঘরে, রাস্তায়, বিদ্যাপীঠে, কর্মক্ষেত্রে এবং সাইবার স্পেসে গড়ে তুলবো নারী ও শিশুর জন্য নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র। অন্যায়, দুর্নীতি, বৈষম্য, নারী নির্যাতন আর দারিদ্র্যের অপমান থেকে মুক্ত করব আমাদের এই মাতৃভূমিকে।’
সমাবেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, জুলাই আন্দোলনের শহিদ পরিবার, রিকশাচালক জুলাই যোদ্ধারা, শিক্ষক, পেশাজীবী ও নানা শ্রেণিপেশার নারী অংশগ্রহণ করেন। রঙিন রিকশা, ব্যানার, পোস্টার ও জয়ধ্বনিতে মুখর ছিল গোটা মানিক মিয়া এভিনিউ।
‘জুলাই কন্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও শপথ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরিশেষে একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।