নোয়াখালী: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় তারা নিয়োগ পরীক্ষার বিভিন্ন কাগজপত্র খতিয়ে দেখেন।
সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন দুদক নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান, উপসহকারী পরিচালক মো. জাহেদ আলম, কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিসসহ একটি দল।
অভিযান সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রণীত নিয়োগ নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে ড. মো. শফিউল্লাহ নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক, রয়েছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় চলতি বছরের গত ২৯জুন ড. শফিউল্লাহকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি পূর্বে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে ড. শফিউল্লাহ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ ও নোবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ড সদস্য প্রফেসর ড. মো. সোলাইমানের ছোট ভাই হওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তাকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে গণ্য করে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যদিও তিনি আগে সহকারী অধ্যাপক নন, বরং সিনিয়র লেকচারার ছিলেন।
ইউজিসি নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে, সহযোগী অধ্যাপক পদে আবেদন করতে হলে চার বছর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে নির্ধারিত জিপিএ থাকা বাধ্যতামূলক।
এদিকে, গত ১০ মার্চ ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে একাধিকবার সংশোধনী আনা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সংশোধনীগুলো কিছু নির্দিষ্ট প্রার্থীকে সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল। এতে নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।
অভিযানের বিষয়ে দুদক সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি। প্রধান কার্যালয়ে আমরা প্রতিবেদন পাঠাব। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। সিনিয়র লেকচারার সমান সহকারী অধ্যাপক সারাবিশ্বে এটাই নিয়ম। পিএইচডি ডিগ্রি থাকলে যেকোনো একটি ফলাফল শিথিলযোগ্য। এছাড়া আমরা বিভিন্ন বিষয় ভেরিফাই করেই নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি।’