Tuesday 22 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি
সন্তানের খোঁজে দিকবিদিক ছুটছেন মা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ জুলাই ২০২৫ ০২:৪৯

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর সন্তানের খোঁজে দিকবিদিক ছুটছেন মা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কুলের বেশকয়েকজন কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রাণহানি ঘটেছে। এমনকি, এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আর প্রাণপ্রিয় শিশুটির খোঁজে দিকবিদিক ছুটছেন কারও মা, কারও বাবা অথবা ভাই-বোন, কারও বা আত্মীয় স্বজন।

সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের ১২ মিনিটের মাথায় ১টা ১৮ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের উপর আছড়ে পড়ে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক আহত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে বিমানটি স্কুলের মাঠে আছড়ে পড়ার পর এর মাথা টুইন টাওয়ারের মতো ভবনের ক্লাস রুমে ঢুকে বিধ্বস্ত হয়। আর স্কুলের এই ভবনটিতে ক্লাস হয় প্রাইমারির শিক্ষার্থীদের। আজকের দুর্ঘটনায় বিমানের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও দু’জন পাইলট। এ ছাড়া, আগুনে পুড়ে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।

এ ঘটনায় সন্তানদের খোঁজে স্কুলে আসেন অবিভাবকরা। কয়েকজন মা সন্তানকে হাসপাতালে খুঁজে না পেয়ে ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু সেখানেও সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে তাদের চোখে দেখা গেছে কান্না ও আর কপালে চিন্তার ভাঁজ। এমনকি, রাতেও সন্তানের খোঁজে আসেন একের পর এক মা-বাবা।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আতিয়া। তাকে খুঁজতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মা। তিনি কাঁদতে কাঁদতে সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছি না। শেষমেষ আমাকে বলেছে, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট হাসপাতালে খোঁজ নিতে। সেখানে যাব। আল্লাহ আমার মেয়েকে আমার কোলে ফিরিয়ে দাও।’

সাদিয়া জাহান। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিমান বিধ্বস্তের খবর পেয়ে বিকেলে মেয়ের খোঁজে আসে মা। সারাবাংলাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। জানি না তার ভাগ্যে কী ঘটেছে। স্বেচ্ছসেবকরা বলেছে, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নাকি আছে। সেখানে যাচ্ছি।’

এভাবে রাতেও সন্তানের খোঁজে স্কুলগেটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনদের। কেউ কেউ সন্তানকে স্কুলে জীবিত ও সুস্থভাবে খুঁজে পেলেও অনেককেই দেখা গেছে খালি হাতে ফিরে যেতে।

এদিকে, স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের পর পরই হেলিকপ্টারে করে মরদেহ ও কিছু আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে পৌনে ২টার পর থেকেই একেক করে ঘটনাস্থলে ঢুকে অনেক অ্যাম্বুলেন্স। এমনকি, রাতেও স্কুলের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেখা গেছে।

অপরদিকে, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ। কিন্তু উদ্ধার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় উৎসুক জনতা। হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভিড় করেন ঘটনাস্থলের আশেপাশে। ফলে উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে ও হতাহতদের নিয়ে বের হতে বেগ পেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের। তবে সন্ধ্যা নেমে আসার পর সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ শুরু করলে সরে যায় উৎসুক জনতা।

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্কুলশিক্ষার্থী ও পাইলটসহ ২০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ১৭১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

সারাবাংলা/এমএইচ/পিটিএম

খোঁজ দিকবিদিক মা মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি সন্তান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর