Sunday 27 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসির জারি করা গণমাধ্যমকর্মীদের নীতিমালা প্রত্যাখ্যান আরএফইডির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৪

নির্বাচন কমিশন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের জারি করা সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা, ২০২৫ প্রত্যাখ্যান করেছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)। একইসঙ্গে নীতিমালাটি সংশোধনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অংশগ্রহণে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার (২৭ জুলাই) সংগঠনের দফতর সম্পাদক মো. আল-আমিনের সই করা এক যৌথ বিবৃতিতে আরএফইডির সভাপতি কাজী জেবেল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই নীতিমালা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নাগরিকের নির্বাচনী তথ্য জানার অধিকারকে সংকুচিত করবে। বিশেষ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ চলাচল, পর্যবেক্ষণ ও তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বলা হয়, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করাটা গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী। নীতিমালাটিতে সাংবাদিকদের নিরাপদ, স্বাধীন ও বাধাহীন কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যা সংবাদ সংগ্রহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাবে।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, নীতিমালায় বিগত নির্বাচন কমিশনগুলোর মতোই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের শর্ত রাখা হয়েছে, যা বাস্তবতার নিরিখে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও গতি-উভয়ের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। প্রশ্ন থেকে যায়-ভোট কারচুপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎক্ষণিক বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে কি নিরপেক্ষ তথ্য সংগ্রহ আদৌ সম্ভব? এছাড়া একই ভোটকক্ষে একাধিক সাংবাদিকের প্রবেশ ও ১০ মিনিটের বেশি সময় অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে অযৌক্তিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীদের কার্যপরিধি সংকুচিত হবে এবং নির্বাচনী অনিয়মের স্বতঃস্ফূর্ত ও নির্ভরযোগ্য পর্যবেক্ষণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এদিকে, নীতিমালায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও, তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাদানকারী কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বা অন্য কারো বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে-সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই, যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতিমালার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি। এছাড়া, নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটকক্ষে সাংবাদিকরা কোনো নির্বাচনী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা ভোটারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না, যা তথ্য সংগ্রহের অধিকারের পরিপন্থী এবং নির্বাচন সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

যদিও সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি নীতিমালার একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত, আরএফইডির মতে এটি সামগ্রিক কাঠামোগত সীমাবদ্ধতাগুলোর তুলনায় অপ্রতুল। আরএফইডি নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি যুগোপযোগী, গণমাধ্যমবান্ধব ও বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই, সাংবাদিকদের জন্য নির্বাচনের সময়কালে পেশাগত কাজ করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে গণমাধ্যকর্মীদের জন্য নীতিমালা জারি করে নির্বাচন কমিশন।

নীতিমালা অনুযায়ী, ভোটার দিন কী করা যাবে, কী যাবে না:

* বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন; পরে প্রিজাইজিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য, ছবি ও ভিডিও নেবেন।

* গোপনকক্ষের ছবি তোলায় বারণ,

* একসঙ্গে দুটির বেশি মিডিয়া ভোটকক্ষে যাবে না; ১০ মিনিটের বেশি থাকতে পারবে না।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে-

* ভোটকক্ষে সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না।

* ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

* ভোটকেন্দ্রে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দুরত্বে করতে হবে।

* ভোট গণনার সময় থাকতে পারবে, ছবি তোলা যাবে; কিন্তু সরাসরি সম্প্রচার নয়।

* ভোটকক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে, ইসির এই নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।

সারাবাংলা/এনএল/এসডব্লিউ

আরএফইডি নির্বাচন কমিশন (ইসি)

বিজ্ঞাপন

আহারে জীবন
২৭ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৬

ডেমরায় হেলে পড়েছে বহুতল ভবন
২৭ জুলাই ২০২৫ ১৭:০৪

আরো

সম্পর্কিত খবর