ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেছেন, সাগরের পাড়ে বসে আমি গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে। আমি এটিকে কোনো অপরাধ মনে করি না, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য এটি একটি দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দলীয় আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব বরাবর পাঠানো জবাবটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট করেন নাসীরুদ্দীন। এর আগে, গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে দল থেকে শোকজ করা হয় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ পাঁচ নেতাকে।
লিখিত জবাবে তিনি লিখেন, ‘৫ আগস্ট আমার কোনো সাংগঠনিক বা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল না। দল থেকেও আমাকে কোনো দায়িত্ব জানানো হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৪ আগস্ট রাতে পার্টি অফিসে গিয়ে দলের আহ্বায়ককে বিষয়টি জানান এবং একই রাতে সদস্যসচিবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সেখান থেকেই নিশ্চিত হন যে দলীয় প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বে তিনি নেই। ফলে তিনি ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ভ্রমণে তার সঙ্গী ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও তাসনিম জারা-খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি।
নাসীরুদ্দীন লেখেন, ‘ঘোরার উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নির্জনে ভাবার সুযোগ তৈরি করা— গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং নতুন সংবিধানের কাঠামো নিয়ে গভীর চিন্তার সুযোগ।’
তিনি এটিকে ‘রাজনৈতিক কর্মীর দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়। ইতিহাস কেবল মিটিংয়ে নয়, অনেক সময় নির্জন চিন্তার ঘরেও জন্ম নেয়।’
সফরের সময় একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। এ প্রসঙ্গে নাসীর জানান, এটি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন— সেখানে পিটার হাস ছিলেন না। এমনকি পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি তখন ওয়াশিংটনেই অবস্থান করছিলেন।
তিনি দাবি করেন, এটি একটি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ এবং ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা’।
জবাবের শেষাংশে নাসীরুদ্দীন লিখেছেন, ‘আমি অতীতেও ঘুরতে গিয়েছি। কখনো কোনোবার তা নিয়ে দলীয় বিধিনিষেধ জানানো হয়নি। অতএব, এই শোকজ বাস্তবভিত্তিক নয়।’