Thursday 11 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকসু নির্বাচন
সবার আগে প্যানেল ঘোষণা ‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন’র

ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট
৭ আগস্ট ২০২৫ ২০:০২

ডাকসু নির্বাচনে সবার আগে প্যানেল ঘোষণা ‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন’র। ফাইল ছবি

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সবার আগে প্যানেল ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। এ সময় তারা নিয়মিত ডাকসু নির্বাচনের দাবি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে। সেইসঙ্গে দলটি ডাকসু বানচালের যেকোনো অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে ডাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা করে ছাত্রসংগঠনটি।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্যানেল

  • সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ইয়াছিন আরাফাত
  • সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে খায়রুল আহসান মারজান
  • সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন

তবে দলটি জানিয়েছে যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে ছাত্র রাজনীতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ছাত্র রাজনীতির নামে হল দখল, চাঁদাবাজি, গেস্ট রুম-গণরুম সংস্কৃতি এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রমের তীব্র সমালোচনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও জানায়, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সবসময়ই কল্যাণমূলক ও শিক্ষার্থী-বান্ধব রাজনীতির চর্চা করে আসছে। তারা নিয়মিত ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির পক্ষে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।

এ সময় ছাত্রসংগঠনটি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ঢাবি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। তবে, তারা ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। সম্প্রতি টিএসসিতে একটি প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকাকে অস্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ডাকসু ভবনের সামনে ‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

ডাকসু ভবনের সামনে ‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, ডাকসু সচল হলে ক্যাম্পাসে পেশীশক্তির আস্ফালন ও অপরাধ প্রবণতা বন্ধ হবে এবং একটি সহাবস্থানমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হবে। দলটি ডাকসুকে কেন্দ্র করে চলা টাকার ছড়াছড়ি ও পুঁজিবাদী আস্ফালনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।

তারা অভিযোগ করেছে যে, কিছু মহল তাদের প্রস্তুতি ও জনসমর্থনের অভাবে পরাজিত হওয়ার ভয়ে ডাকসু নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এসব মহলকে তাদের ডাকসুবিরোধী প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানায় তারা।

দলটি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে যে, তফসিল অনুযায়ী ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং এর জন্য তারা নির্বাচন কমিশনকে সবধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এ সময় যেকোনো ধরনের হিংসাত্মক মন্তব্য, গুজব ও ডাকসু বানচালের প্রবণতা ঠেকাতে প্রশাসনের শক্ত পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, তাদের প্যানেল থেকে শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত হলে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-

১. নারী শিক্ষার্থীদের হলে বৈদ্যুতিক পাখা অথবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
২. রেজিস্ট্রার অফিসকে ডিজিটাল করা
৩. শতভাগ আবাসন সুবিধা এবং আবাসন মানের উন্নয়ন
৪. গবেষণামূলক স্কলারশিপ ও ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি
৫. ডিজিটাল লাইব্রেরি ও স্মার্ট ক্লাসরুম
৬. অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা ব্যবস্থা সহজীকরণ
৭. বিভাগ ও হল পর্যায়ে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে ‘ছাত্র-অভিযোগ সেল’ গঠন
৮. উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং ক্যারিয়ার গাইডেন্স
৯. প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মাথাপিছু ব্যয় স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবহার
১০. সব ছাত্রসংগঠনের রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠা

সারাবাংলা/কেকে/পিটিএম