Wednesday 13 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আধুনিক চাষে ঝুঁকছেন কৃষক, লাভজনক ‘মার্সেলো’ তরমুজে আগ্রহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৫ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৫ ১০:৩৮

নওগাঁ: ‘মার্সেলো’ একটি বিশেষ জাতের কালো হাইব্রিড তরমুজ। এই জাতের তরমুজ সব মৌসুমে চাষ করা গেলেও বর্ষায় এর ভালো ফলন হয়। উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল বর্ষাকালীন ‘মার্সেলো’ তরমুজের বাম্পার ফলনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এদিকে, কৃষি বিভাগও কৃষকদের আধুনিক ও লাভজনক ফসল চাষে উৎসাহিত করছে।

নওগাঁর রাণীনগর ও সদর উপজেলার স্থানীয় কৃষকরা হাইব্রিড ‘মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে, ভোক্তারাও  সারা বছর তরমুজের স্বাদ নিতে পারছেন।

জেলা কৃষি বিভাগের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী প্রকল্পের মাধ্যমে রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নে প্রায় এক একর জমিতে প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাচার ওপর ঝুলছে কালো রঙের তরমুজ। অনেক তরমুজ আবার জাল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, যাতে সেগুলো ছিঁড়ে না পড়ে। নতুন এই জাতের তরমুজ দেখতে প্রতিদিন আগ্রহী কৃষক প্রদর্শনী প্রকল্প দেখতে আসছেন। বাম্পার ফলন দেখে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন।

প্রদর্শনী প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই তরমুজ খুব দ্রুত বাড়ে। চারা লাগানোর মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ দিন পর থেকেই ফল তোলা যায়। তবে শীতকালে মাটিতে চাষ করলে ফল সংগ্রহ করতে ৭০ থেকে ৭৫ দিন সময় লাগে। ভালো ফলনের জন্য মালচিং পেপার ব্যবহার করে মাচা পদ্ধতিতে চাষ করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।

বর্ষাকালে প্রতিটি তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়। তবে শীতকালে এর ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে চাষ হওয়া ফলগুলোর ওজন ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম, এবং আর ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এগুলো সংগ্রহের উপযুক্ত হবে।

এই তরমুজগুলো দেখতে লম্বাটে ও ডিম্বাকৃতির। এর ভেতরের মাংসল অংশ গাঢ় লাল রঙের, যা দেখতে খুব আকর্ষণীয়। এটি খেতেও খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। তরমুজের খোলস বেশ মোটা হওয়ায় এটি প্রায় এক মাস পর্যন্ত স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে খাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫০০ থেকে ২০০০টি তরমুজ পাওয়া সম্ভব।

রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষী নিরাঞ্জন চন্দ্র জানান, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকের ব্যবহার ছাড়াই ‘মার্সেলো’ জাতের তরমুজের ভালো ফলন পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি এবার ২৫ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে মাচায় বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, এতে প্রতিটি তরমুজ কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবেন।

রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান জানান, উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। চাষে খরচ কম, লাভ বেশি।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. মোস্তাকিমা খাতুন চৈতি জানান, কৃষি বিভাগ এখন কৃষকদের আধুনিক ও লাভজনক ফসল চাষে উৎসাহিত করছে। এর অংশ হিসেবেই উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের কালো তরমুজ চাষ করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এসআর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর