Thursday 11 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চাকরিচ্যুতদের অবরোধ: ২৫ ব্যাংকে ৫ ঘণ্টা গ্রাহক সেবা বন্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ আগস্ট ২০২৫ ১৬:২২ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৫ ১৭:২৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ছয় ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় অন্তঃত ২৫টি ব্যাংকের কার্যক্রম প্রায় ৫ ঘন্টা বন্ধ ছিল। এসময় গ্রাহকরা এসব ব্যাংকের শাখায় প্রবেশ করতে পারেন নি। ব্যাংকের অভ্যন্তরেও সেবা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে।

রোববার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে সকল ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিচ্যুতরা। এক পর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কও কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে রাখেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্তঃত ৬টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়। ব্যাংকগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। নতুন পর্ষদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়। এরপর এসব ব্যাংক থেকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হয়।

বিজ্ঞাপন

চাকরিচ্যুতদের অভিযোগ, ব্যাংকগুলোতে কর্মরতদের মধ্যে যাদের বাড়ি এস আলমের বাড়ি অর্থাৎ পটিয়া উপজেলায় তাদের এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের বেছে বেছে বিনা নোটিশে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এতে প্রায় সাত হাজার ব্যাংক কর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে অনেকের বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা কোথাও চাকরিও পাচ্ছেন না। হাজার-হাজার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এ অবস্থায় ‘চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে ব্যাংকিং কার্যক্রম অবরোধ’ লেখা ব্যানার নিয়ে পটিয়া উপজেলা সদরে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে হাজারেরও বেশি চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারী অবস্থান নেন। প্রায় চার ঘন্টা ধরে সরকারি-বেসরকারি প্রায় ২৫টি ব্যাংকের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ হয়ে থাকার পর উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে যান।

তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে দুপুর ১টা থেকে পর্যায়ক্রমে অবরোধ সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর দুপুর ২টা থেকে ব্যাংকগুলোতে আবার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা সকাল থেকে আন্দোলন করছিলেন। আমরা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। গ্রাহকের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে উনাদের ব্যাংকগুলোর প্রবেশপথ থেকে সরে যাবার অনুরোধ করি। দুপুর ১টা থেকে উনারা সরে যেতে শুরু করেন। প্রথমে সোনালী ব্যাংক, এরপর পর্যায়ক্রমে সব ব্যাংকের সামনে থেকে উনারা সরে যান।’

চট্টগ্রামের পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকের সামনে চাকরিচ্যুত লোকজন বিক্ষোভ করেছেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। মহাসড়কেও কিছুক্ষণ অবস্থান নিয়েছিল। তবে সেখান থেকে তারা আবার নিজেরাই সরে যান। পরে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যায়।’

সারাবাংলা/আরডি/আরএস