Wednesday 13 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা কমাতে হবে: শারমীন এস মুরশিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ আগস্ট ২০২৫ ১৯:২৩ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৫ ১১:২৭

সংলাপ অনুষ্ঠানে শারমীন এস মুরশিদ।

ঢাকা: বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও সুযোগ সম্প্রসারণে সরকারি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেছেন, “রাজনীতির ময়দান থেকে নির্বাচনী মাঠ পর্যন্ত নারীর জন্য প্রতিবন্ধকতা কমাতে হবে”।

রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) আয়োজিত ‘ইলেকশন ক্যাম্পেইন ফান্ডিং (উইমেন ক্যান্ডিডেটস) অর্ডিন্যান্স’ বিষয়ক ঐতিহাসিক পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইউকেএইড-এর অর্থায়নে এবং বি-স্পেস প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও সুযোগ সম্প্রসারণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এস মুরশিদ বলেন, ‘রাজনীতির ময়দান থেকে শুরু করে নির্বাচনী প্রতিযোগিতার মাঠে নারীর জন্য প্রতিবন্ধকতা কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি, নারী সংস্কার কমিশনের সদস্য, কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি, নারী সংগঠন ‘জুলাই কন্যা’-এর সদস্য, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং নাগরিক সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘এই সংলাপ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার সংস্কারে সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে এগিয়ে আসার যে অঙ্গীকার করেছে, তা ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক।’ তিনি খসড়া অর্ডিন্যান্সকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামত ও অংশগ্রহণকে প্রশংসা করেন।

সংলাপে নারী প্রার্থীদের জন্য লিঙ্গ-সংবেদনশীল সরকারি তহবিল কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, আবেদন প্রক্রিয়াটি যেন সহজ ও সবার জন্য প্রবেশযোগ্য হয় এবং তহবিল ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থার ব্যবস্থা করতে হবে।

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের মুখ্য পরিচালক ড. মো. আব্দুল আলীম অনুষ্ঠানে খসড়া অর্ডিন্যান্স উপস্থাপন করেন এবং এর প্রত্যাশিত ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

সংলাপে বক্তারা একমত হন যে প্রস্তাবিত উদ্যোগটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রাজনৈতিক নেতারা উপস্থাপনায় সমর্থন জানিয়ে বলেন, বিষয়বস্তু পরিমার্জনের পর দ্রুত এটি পাশ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি জানান, অর্ডিন্যান্সটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হলে কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি (COP) ক্যাথরিন সিসিল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রমাণ করে যে সরকারি তহবিল নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। বর্তমানে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপট পুনর্গঠনের এক যুগান্তকারী সুযোগ রয়েছে। সুতরাং সরকারি তহবিল নারীদের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করবে এবং সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রস্তাবিত ইলেকশন ক্যাম্পেইন ফান্ডিং (উইমেন ক্যান্ডিডেটস) অর্ডিন্যান্স নারীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সহায়ক হবে। এটি শুধু নারী প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তাই দেবে না, বরং তাদের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সুযোগও বাড়াবে।

নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, এমন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নারীরা আরও আত্মবিশ্বাসী হবে এবং সংসদ ও স্থানীয় সরকারে নারীর সংখ্যা বাড়বে।

সংলাপের অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেছেন, প্রস্তাবিত অর্ডিন্যান্স দ্রুত আইন আকারে গৃহীত হয়ে বাস্তবায়িত হবে, যাতে ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে নারী প্রার্থীরা এ সুবিধা পেতে পারেন।

সারাবাংলা/এফএন/এসডব্লিউ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর