গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার আরও পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের একটি আবাসস্থল লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ এবং তার চার সহকর্মী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে এই হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
নিহত সাংবাদিকেরা হচ্ছেন- প্রতিবেদক আনাস আল-শরীফ ও মোহাম্মদ কুরাইকেহ এবং ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল ও মোয়ামেন আলিওয়া। তারা হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে সাংবাদিকদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে ছিলেন। সেটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল।
এদিকে, হামলার পরপরই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) টেলিগ্রামে জানায়, তারা আনাস আল-শরীফকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আইডিএফের দাবি, আনাস আল-শরীফ হামাসের একটি সশস্ত্র সেলের প্রধান ছিলেন। তবে নিহত বাকি চার সাংবাদিকের বিষয়ে তারা কিছু জানায়নি।
আল জাজিরা এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর পরিকল্পিত ও প্রকাশ্য হামলা এবং টার্গেটেড অ্যাসাসিনেশন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আল জাজিরার হিসেব অনুযায়ী, এই হামলায় মোট সাতজন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তারা চার সাংবাদিক নিহত হওয়ার কথা জানালেও কয়েক ঘণ্টা পর তা সংশোধন করে পাঁচজন বলে জানায়।
নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ২৮ বছর বয়সী আল-শরীফ উত্তর গাজা থেকে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্স এক পোস্টে লিখেছেন, ইসরায়েল গাজা শহরের পূর্ব এবং দক্ষিণ অংশে তীব্র বোমাবর্ষণ করছে।
আইডিএফের অভিযোগ, আল-শরীফ সাংবাদিক সেজে কাজ করছিলেন এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক ও সেনাদের ওপর রকেট হামলা পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন। সেনাবাহিনীর দাবি, তার সামরিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণস্বরূপ তারা আগেই গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করেছিল, যাতে ‘সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কোর্সের তালিকাও’ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আইডিএফ জানায়, হামলার আগে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য নির্ভুল অস্ত্র, আকাশ থেকে নজরদারি এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১৮৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।