ঢাকা: গ্রাহকের আমানত আত্মসাতের অভিযোগে ‘আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’-এর ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ-এর মালিকানাধীন কাফরুল থানা এলাকায় অবস্থিত ‘ইউরো স্টার টাওয়ার’ নামক দশতলা বাণিজ্যিক ভবন ক্রোক করেছে সিআইডি। ভবনটির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
জসীম উদ্দিন খান বলেন, অভিযুক্ত মনির আহমেদ গত ২০০৫ সালে ‘আহমেদীয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি’ নামে ঢাকা জেলা সমবায় সমিতি থেকে নিবন্ধন নেন। এরপর ২০০৬ সালে নাম পরিবর্তন করে ‘আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে পুনঃনিবন্ধন নেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সমিতির মূল উদ্দেশ্য ছিল সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও শেয়ার আমানত সংগ্রহ করে তা থেকে সদস্যদের ঋণ প্রদান এবং তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। প্রতিষ্ঠার সময় সদস্য সংখ্যা ছিল ২০ জন, যা ২০১৮ সালের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী তা দাঁড়ায় ২১ জনে। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ছিল ২,০০০ টাকা।
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সমিতিটি শুধু সদস্যদের মধ্যেই ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও অভিযুক্ত মনির আহমেদ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, মহাখালী, কাফরুলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১,০০০ থেকে ১,১০০ জনের কাছ থেকে অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে তিনি নিজের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মনির আহমে সহ অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় করা হয়েছে।
সিআইডি’র এই কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত চলাকালে সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ইব্রাহিম মৌজায় ৮.৪৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ‘ইউরো স্টার টাওয়ার’ নামক বাণিজ্যিক ভবনটির সন্ধান পায়। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই তারিখে ভবনটি ক্রোকের আদেশ দেন। গ্রাহকের আমানত আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং মামলাটির তদন্তে কাজ করছে সিআইডি।