ঢাকা: ‘পিআর সিস্টেম মানুষ বোঝে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ এবং মহাসচিব ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিলসহ চিকিৎসকদের নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি।
জাহিদ বলেন, ‘এদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। মানুষ জানতে চায় তার প্রতিনিধি কে? তাদেরকে সরাসরি দেখতে চায়। এদেশের মানুষ পিআর (সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা) সিস্টেম কি? এটা এদেশের মানুষ কোনোদিন প্র্যাকটিস করে নাই, জানেও না।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশের পিআর আছে, নন-পিআর আছে। কিন্তু বড় গণতান্ত্রিক দেশ বলেন, ভারত, ইউকে, ইউ্এসএ। ওসব দেশে কি পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে? কোথাও না। কাজেই মনে রাখতে হবে, জনগণ তার প্রতিনিধিকে সরাসরি দেখতে চায় নির্বাচনের মাধ্যমে।’
জাহিদ বলেন, ‘পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করার জন্য চিন্তাভাবনা করছেন তারাই হয়ত পিআর পদ্ধতির কথা বলে থাকেন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, জনগণের মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। এই জনগণ বিগত ২০০৮ সাল থেকে ’২৪ সাল পর্যন্ত তাদের যে মালিকানা সেটা ফেরত পায় নাই। বিভিন্ন ধরনের নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু মানুষের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, নির্বিঘ্নে দেব, নিঃসংকোচে দেব।’
তিনি বলেন, ‘যারা আজকে ধমক দেন নির্বাচন হতে দেবেন না। তারা কি ভেবেছেন জনগণ কী চায়, জনসমর্থন কী এটাতে আছে? আপনারা মবকালচার সৃষ্টি করেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন? দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা গত এক বছর যাবত কী ধরনের পড়াশুনা হচ্ছে, সেটি কী আপনারা লক্ষ্য করেছেন? আপনারা বলেন, নতুন প্রজন্ম। আমরা কী পুরোনো প্রজন্ম? আপনারা কী নতুন প্রজন্ম? কখনোই না।’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘২৪ এর আন্দোলন একটি ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতার আন্দোলন। কোনো একক গোষ্ঠীর আন্দোলন নয়। কাজেই কোনো অবস্থাতেই ধমক দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখবেন, এটা হবে না। ইতিহাস শিক্ষা দেয় যারা ’৭৩ এ ছিলেন তারাও যেমন দাবিয়ে রাখতে পারেন নাই, আর বিগত স্বৈরাচার অনেক ধমক, অনেক প্রশাসন, অনেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক গুম, অনেক শহিদ, অনেক পঙ্গুত্ব বরণ করিয়েছেন। তারপরও মানুষকে দাবিয়ে রাখা যায়নি, উনাদের শেষ রক্ষা হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘২৪ এর জুলাই আন্দোলনে আমরা সবাই একসঙ্গে ছিলাম। আসুন, একসঙ্গে থাকি এবং দেশের মানুষের ওপর দায়িত্ব দেই, তারা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচিত করুক এবং সেই নেতৃত্বের মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ হবে। তাহলেই শহিদদের আত্মা শান্তি পাবে, পঙ্গুত্ববরণকারী মানুষগুলো তাদের যে কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। আমাদের এখন দায়িত্ব হচ্ছে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে এমন একটি জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেখানে মানুষ নির্বিঘ্নে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। জনগণ বেছে নেবে তার প্রতিনিধি কে হবে?’