ঢাকা: ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল ও বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদারের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন লেবার অ্যাটাশে লীনা খান, ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি. ফ্রস্ট, ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস অ্যাটাশে এরিন কোভার্ট এবং ইকোনমিক অফিসার রিচার্ড রাসমুসেন।
বিজিএমইএ পক্ষে সভাপতির পাশাপাশি সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান, সহ-সভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল—মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধি, তুলা ও ম্যান-মেইড ফাইবার আমদানির সম্ভাবনা, চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে ওয়্যারহাউজ স্থাপন, শ্রম অধিকার ও আইন সংস্কার, এবং ভবিষ্যতে এলএনজি আমদানির সম্ভাবনা। বিশেষভাবে আলোচিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক সুবিধা—যেখানে রপ্তানি পোশাকে ২০% মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহৃত হলে অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আংশিক অব্যাহতি পাওয়া যাবে। বিজিএমইএ নেতারা এ সুবিধা কাজে লাগাতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা বিষয়ে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করে। এর উত্তরে ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি. ফ্রস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন।
বৈঠকে ইউএস কটন কাউন্সিলের সঙ্গে বিজিএমইএ এর সম্ভাব্য সহযোগিতা (কোলাবোরেশন) নিয়েও আলোচনা হয়। ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি. ফ্রস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট এর সঙ্গে আলোচনা করে দূতাবাস এ ব্যাপারে বিজিএমইএ’কে একটি ফিডব্যাক দিবে।
শ্রম অধিকার প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাকখাতে স্থিতিশীল শ্রম পরিস্থিতি বিজিএমইএ এর অন্যতম অগ্রাধিকার এবং তার বোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ৮১টি শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে। তিনি শ্রম অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের আইনি সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কেও মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদলটিকে অবহিত করেন।
মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল বলেন, এটি আন্তর্জাতিক প্রত্যাশা যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সংগতি রেখে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার করা হবে এবং এটি আইএলও ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সবার চাওয়া। বিজিএমইএ নেতারা শ্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করার ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে করে কোথাও কোন অস্পষ্টতা না থাকে।
এছাড়া, ২০২৬ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য সিলেক্ট ইউএসএ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিজিএমইএ নেতাদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেন, এটি বাংলাদেশী পোশাক উদ্যোক্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং তৈরিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করবে।