ঢাকা: রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের জননী এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির মেট্রো পিলারের ৩২২ এর উল্টো পাশে ৫৮৩ অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫)। তিনি চার সন্তানের জননী। তারা অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতেন। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সিফাত আলী (৩০) ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোন করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে থাকা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছি। মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্বামী পলাতক রয়েছে।’
নিহতের ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, ‘রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানায় কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে, কেয়া আর বেঁচে নেই। এর পর নাজমা বেগম তার স্বামীসহ দ্রুত বাসায় পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পান, সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ডাক্তাররা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করে। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।’
ভুক্তভোগী কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, সিফাত খুবই বদমেজাজি। সন্তানদের সামনেই তাদের মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও মারধর করতো। সে নিজে কিছু করে না। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ছিল এবং এর বলি হয়েছে কেয়া।
তিনি বলেন, ‘কেয়ার চার সন্তান। এক মেয়ে। তিন ছেলে। এদের মধ্যে বড় মেয়েটি ভিকারুননিসা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন আগে কেয়া ফোন করে বলছিল, সে আর পারছে না, সংসার করবে না, একবারে ফিরে আসতে চাইছিল। আমরাই বুঝিয়ে আটকাইছি। ভুল করছি। আজ তার খেসারত মেয়েটা দিয়ে গেল।’
তিনি আক্ষেপ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছোট ছোট নাতি-নাতনিদের কী হবে? আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। গলায় দাগ দেখেছি। সুস্থ মানুষ হঠাৎ করে মারা যাবে- এমনটা হতে পারে না। সিফাত কেন পালাবে?’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সিফাতের বাবা দীর্ঘদিন ধরে হংকংয়ে থাকেন এবং তার মা অনেক আগেই মারা গেছেন।