আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রুশ আগ্রাসনের শিকার দেশটির নাগরিকরা এই বৈঠককে ‘অর্থহীন’ ও ‘পুতিনের কূটনৈতিক বিজয়’ হিসেবে দেখছেন।
ইউক্রেনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ব্যবস্থাপক পাভলো নেব্রোভ বলেন, ‘আমি যা ভেবেছিলাম, ঠিক সেটাই হলো। এটা পুতিনের জন্য বড় জয়। তিনি তাঁর বৈধতা আদায় করে নিয়েছেন।’
২০২২ সালে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্ব পুতিনকে এড়িয়ে চললেও ট্রাম্প তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানান। তবে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে রাখা হয়নি, যা ক্ষোভ বাড়িয়েছে। জেলেনস্কি এ বৈঠককে ‘পুতিনের ব্যক্তিগত জয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ইউক্রেনীয় নাগরিকরা বলছেন, ‘তাদের দেশকে বাদ দিয়ে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। এটা সময়ের অপচয়। ইউক্রেনের সমস্যার সমাধান ইউক্রেনকেই নিয়ে করতে হবে,’ বলেন পাভলো।
কোনো চুক্তি ছাড়াই ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠক শেষে ট্রাম্প সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেননি, যা গণমাধ্যমবান্ধব মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য একেবারেই অস্বাভাবিক।
এদিকে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরই রাশিয়া ইউক্রেনে ৮৫টি ড্রোন ও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
বৈঠক ঘিরে যা ঘটেছে, তাতে অবাক হননি ৩৬ বছর বয়সী খারকিভের ওলিয়া দোনিক। তিনি বলেন, ‘কোনো অর্জন ছাড়াই এটি শেষ হয়েছে। ঠিক আছে, চলুন ইউক্রেনে আমরা আমাদের জীবন চালিয়ে নিই।’
খারকিভের আলোকচিত্রী ইরিনা দারকাচ বলেন, “আলোচনা হোক বা না হোক, খারকিভে প্রতিদিনই হামলা হয়। কোনো পরিবর্তন নেই। আমরা জয়ে বিশ্বাসী। আমরা জানি, এটা আসবে। তবে একমাত্র ঈশ্বর জানেন, কে আমাদের এটা এনে দেবেন।’
এই আলোকচিত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস হারাই না। আমরা অনুদান দিচ্ছি, যত দূর পারছি সাহায্য করছি। আমরা আমাদের কাজ করছি, আর ট্রাম্প কী করছেন, তা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না।’