রংপুর: ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আমরণ অনশন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ ফটকের সামনে বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। পরে দুপুর আড়াইটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অনশনস্থলে এসে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে তারা দাবি আদায়ে অনড়।
তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদের বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি। গত জুলাই মাসে ছাত্র অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন ঘটলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় আবেদন ও আন্দোলন সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেখানো হয়নি।
শিক্ষার্থীদের মতে, লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা এবং প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনে তুলে ধরার একমাত্র উপায় হলো নির্বাচিত ছাত্র সংসদ। অথচ অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে চলেছে, যা শহিদ আবু সাঈদের আত্মদানের চেতনাকে অমর্যাদা করছে।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখেন, ‘জুলাইয়ে অর্জিত স্বাধীনতা, ছাত্র সংসদ পেলে পাবে পূর্ণতা’, ‘এক দফা এক দাবি, ছাত্র সংসদ কখন দিবি’, ‘সাঈদ যেদিন বুক পেতেছে, ভয় সে দিন দূর হয়েছে’, ‘ছাত্র সংসদ আমাদের অধিকার’ ইত্যাদি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী জানান, আমি ইউজিসির সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী নভেম্বরের মধ্যেই বেরোবিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদান করেই আবু সাঈদের হত্যার বিচার এবং ছাত্র সংসদ নিয়ে কথা বলেছি। সেটি শিক্ষার্থীরাও জানে। তাই তাদের ধৈর্য ধরতে বলব। আশা করি স্বায়ত্তশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে আমরাই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করব। ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণে কোনো কার্যকর ঘোষণা না আসায় তারা আমরণ অনশনে বসেছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।