ঢাকা: ভোট প্রস্ততির এ মুহুর্তে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ। সেইসঙ্গে নির্বাচনে নতুন কোনো ভোটকেন্দ্র যুক্ত করা হবে না বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১৮ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে মাঠ কর্মকর্তাদের সমন্বয় নিয়ে বৈঠক করছেন ইসি সচিবালয়। এরইমধ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় সার্বিক প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন তিনি।
নির্বাচনি আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা তো আরও পরের ব্যাপার, আমাদের কনসার্ন হওয়ার এই মুহূর্তে কোনো কারণ আছে? আমরা আমাদের জিনিসটা গুছিয়ে নিচ্ছি, যে যার জায়গাটাকে গুছিয়ে নিলেই তো হয়ে যাবে। সেটা নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আমরা এই মুহূর্তে জড়িত আছি।
ইসি সচিব জানান, মাঠ প্রশাসনে যারা আছে তারা রেসপেক্টিভ এরিয়াতে কাজ করছেন, আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে যারা আছেন তারা রেসপেক্টিভ এরিয়াতে করছেন। “আমাদের ভেতরে একটা যোগাযোগ তো আছেই। এটা নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করার কোনো যুক্তিসংত কারণ নেই।”
নির্বাচনি রোডম্যাপের খসড়া করা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে তা তুলে ধরা হবে বলেও জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “একটা কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারে বলা হয়েছিল এই সপ্তাহে। এটা (রোডম্যাপ) কোঅর্ডিনেট করা হচ্ছে, কর্মপরিকল্পনা আন্ত অনুভাগ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে ড্রাফটটা করা হয়েছে। ড্রাফটটা এখন কমিশনে দিয়ে আমরা এপ্রুভ করব। এটা আমরা এই সপ্তাহের ভিতরে দিতে পারব।”
সচিব জানান, মাঠ প্রশাসনে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় কিভাবে হবে, তাদের কার্যপরিধি কি হবে, ফোকাল পার্সন নির্ধারণের ব্যাপার আছে; পরিপত্র নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কিত যে কাগজপত্র তৈরি করা এ বিষয়ে এখন একটা মিটিং চলছে।
“আমরা কোঅর্ডিনেট করার চেষ্টা করছি যেন আমরা একটু এহেড ইন টাইম কাজগুলোকে গুছিয়ে রাখতে পারি।”
সীমানা আপত্তি শুনানি বিষয়ে তিনি বলেন, এবার ৩০০ আসনের মধ্যে ৮৩টি আসনের দেড় সহস্রাধিক দাবি-আপত্তি এসেছে। শুনানি শেষ করে দ্রুত নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চলছে।
ইসি সচিব বলেন, “সীমানা নির্ধারণের যেসব আপত্তি এসেছে, ২৪ অগাস্ট থেকে শুনানি শুরু করব। একটানা চারদিন চলবে এবং এটাকে ফাইনালাইজ করব”।
এবার পৌনে ১৩ কোটি ভোটার দাঁড়াবে নির্বাচনের সময়। সবশেষ গত সংসদ নির্বাচনে ১২ কোটি বেশি ভোটারের জন্য ৪২ হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র ছিল। এবার ভোটকেন্দ্র না বাড়িয়ে কীভাবে সমন্বয় করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা নিচ্ছে ইসি সচিবালয়।
সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “মান্থলি কোঅর্ডিনেশন কমিটি মিটিং এ ভোট কেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি যে ভোট কেন্দ্র সংখ্যা বাড়বে না। বাড়বে না এর অর্থ এই নয় যে- অতীতে যা ছিল সেটাই একদম হুবহু এটা রাখতে হবে বা সংখ্যা। যৌক্তিক বিবেচনায় যদি বাড়ে সেটা হবে।”
প্রতি ৩০০০ ভোটারের জন্য একটা কেন্দ্র করে ভোটার উপস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করছে ইসি।
তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা, ভোট কেন্দ্র না বাড়িয়েও শুধু ভোটার উপস্থিতির বিষয়টাকে যদি আমরা বিবেচনায় নেই তাহলে হয়তো দেখা যাবে যে এটাকে সমন্বয় করতে পারছি।”
তরুণদের জন্য আলাদা বুথ করার বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, “এখনো পর্যন্ত এটা আমাদের কোনো আলোচনায় আসেনি। যদি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে হবে। যদি না হয় এটা সেটা ভোট কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার মধ্যে। এখন আমরা এই মুহূর্তে হচ্ছে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যার ভেতরে কিভাবে ব্যবস্থাপনাটা করবে সেটা পরের ব্যাপার।”
নিবন্ধন প্রত্যাশী বাছাইয়ে টিকে থাকা ২২টি দলের অফিস, কমিটির তদন্তের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান সচিব।
“রাজনৈতিক দলের যে ২২টা দল প্রাথমিকভাবে বাছাই হয়ে, তাদের তদন্ত মাঠ পর্যায়ে পাঠানো দরকার সেটা পাঠিয়ে দিয়েছি। আর যাদেরটা বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য হয়নি তাদেরকে আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছি।”
এবার কোনো কারণে বা কোনো শর্তের অপূর্ণতার কারণে তাদেরটা বিবেচনা করা যায়নি সেটা স্পেসিফিক করে উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।