যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার (১৮ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে বৈঠকের আগে তিনি স্পষ্ট করে জানান, ‘ইউক্রেন কোনো ভূখণ্ড ছাড়বে না এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষাও ত্যাগ করবে না।’
রোববার (১৭ আগস্ট) ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছিলেন, ‘যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে হলে ইউক্রেনকে দুটি শর্ত মেনে নিতে হবে—ক্রিমিয়া আর ফেরত পাওয়া যাবে না এবং ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে।’
জবাবে জেলেনস্কি এক্স-এ (টুইটার) লিখেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার দায়িত্ব ইউক্রেনের নয়, রাশিয়ার। রাশিয়াই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাই রাশিয়াকেই শেষ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে রক্ষা করব। ক্রিমিয়া যেমন ছেড়ে দেওয়া উচিত হয়নি, তেমনি কিয়েভ, ওডেসা বা খারকিভও ছাড়ব না।’
২০১৪ সালে গণভোটের পর ক্রিমিয়াকে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে। মস্কো দাবি করে, উপদ্বীপের বিপুল সংখ্যক জনগণ রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। অন্যদিকে কিয়েভ তখন পূর্বাঞ্চলে নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিল বলে অভিযোগ করে রাশিয়া।
যদিও কোনো ছাড় দিতে রাজি নন, তবু ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস আমন্ত্রণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘আমাদের উভয়ের মধ্যেই এই যুদ্ধ দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে শেষ করার দৃঢ় ইচ্ছা রয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে পুতিন ও ট্রাম্প দু’জনেই ইউক্রেন সংঘাত সমাধানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। বৈঠকের পর পুতিন আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন, যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের জন্য প্রয়োজন মূল সমস্যাগুলোর সমাধান। রাশিয়ার মতে, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যদি ইউক্রেন ন্যাটো সদস্যপদের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে, দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণ করা হয় এবং বর্তমান ভূখণ্ড বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়—যার মধ্যে ক্রিমিয়ার পাশাপাশি দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলও রয়েছে। ২০২২ সালে এই চার অঞ্চলে রাশিয়ার পক্ষে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং সেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।