খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ডিসিপ্লিনের বিভিন্ন বর্ষের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী ৪৭৫ জন শিক্ষার্থীকে অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষের স্বীকৃতিস্বরূপ মেধাবৃত্তির চেক ও সনদপত্র প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি ভিসি প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে চেক, সনদপত্র ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।
সনদপত্র বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বলেন, শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষের জন্য মেধাবৃত্তি এবং এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি তথা সনদপত্র দেওয়া নিঃসন্দেহে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি ভালো ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। এটি শুধু তাদের মেধার নয়, বরং পরিশ্রম, সততা ও আত্মনিবেদনেরও স্বীকৃতি। মেধাবীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরও উৎসাহিত করতে হবে, যাতে তারাও আগামীতে এই সাফল্য অর্জন করতে পারে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ অর্জনের পাশাপাশি কমিউনিকেশন দক্ষতা ও কম্পিউটার জ্ঞান তথা সফট স্কিলেও পারদর্শী হতে হবে। সমালোচনামূলক চিন্তাশীলতা গড়ে তুলতে হবে। সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে সময়োপযোগী হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে। সর্বোপরি, ভালো মানুষ হয়ে সমাজ ও জাতিকে আলোকিত করার মানসিকতা থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। জীবনে হতাশা এলে তা কাটিয়ে উঠে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য স্থির করে সেই লক্ষ্য পূরণে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক সাফল্যের জন্য মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়। সেই সাফল্যের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি হচ্ছে এই সনদপত্র। এটি ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের সিভি সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে। সিভিতে শুধু অ্যাকাডেমিক তথ্য নয়, সেশনাল ওয়ার্ক, থিসিস, প্রজেক্ট, কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের তথ্যও উল্লেখ করা উচিত।
বৃত্তি নীতিমালার বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসিতে বৃত্তি পেয়েছে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ থাকে না। এ নিয়ম যুক্তিসংগত নয়। একজন শিক্ষার্থী পূর্বের অর্জনের পাশাপাশি নতুন করে যোগ্যতা প্রমাণ করলে তাকে অবশ্যই বৃত্তির সুযোগ দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সরকারের যে নীতিমালা রয়েছে, তা যৌক্তিক পর্যায়ে এনে সংশোধন করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. গোলাম হোসেন ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত। স্বাগত বক্তব্য দেন বৃত্তি কমিটির সভাপতি এবং কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবীর।
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন ইংরেজি ডিসিপ্লিনের এস এম রেদোয়ান, শিক্ষা ডিসিপ্লিনের নাবিলা ইসলাম ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের রাধিকা চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুমাইয়া আক্তার ও খান মোহাম্মদ মুশফিক আকিব। এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রধান, প্রভোস্ট, বিভাগীয় পরিচালকসহ শিক্ষক ও মেধাবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।