ঢাকা: দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ‘অদ্ভুত এক ঘটনা’ ঘটতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন ।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। কিন্তু বাংলাদেশে করছে একদল অনির্বাচিত লোক। কেউ আমেরিকা থেকে এসেছে, কেউ লন্ডন থেকে, কেউ আবার অন্য দেশ থেকে এসেছে। যাদের গত ১৭ বছরের সংগ্রামে কোনো অংশগ্রহণ নেই, জুলাই অভ্যুত্থানেও কোনো ভূমিকা নেই—তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিতে চায়।’
তিনি দাবি করেন, এভাবে চলতে থাকলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না বরং নতুন অস্থিরতা তৈরি হবে।
এসময় হাফিজ উদ্দিন কঠোর সমালোচনা করেন প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে। তার অভিযোগ, স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারের সৃষ্ট দুটি রাজনৈতিক দলই কেবল পিআর পদ্ধতিকে সামনে টেনে আনছে।
তার ভাষায়, ‘যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারা নতুন নতুন তত্ত্ব আনছে। পিআর নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে—তাই অনেকে ওই সময়ে নির্বাচন চান না।’
তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘সরকারসৃষ্ট দল’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং বলেন, ‘যাদের এখনও নিবন্ধন হয়নি তারাই বলছে নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না।’
একইসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় না, বরং একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র গঠন করে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে চায়।’
শহিদ ছাত্রনেতা আবু সাঈদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ধনী—কারণ এখানে আবু সাঈদের মতো সন্তান জন্মেছে। নিরস্ত্র হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়, পৃথিবীতে এ রকম উদাহরণ খুব বেশি নেই। ইউরোপ-আমেরিকার বহু পরাশক্তি, যাদের রিজার্ভে কোটি কোটি ডলার আছে, তাদের দেশেও এমন উদাহরণ নেই। সুতরাং আমাদের গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি নিশ্চিতভাবেই বিজয়ী হবে। জনগণ বিএনপিকে ক্ষমতায় আনলে দল ‘খেদমত করবে’ বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।