ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তির দেওয়া শর্ত ও বক্তব্য জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যে কোনো কৌশল বা শর্তের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার সীমাবদ্ধ করা হলে তা দেশের গণতান্ত্রিক স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের বক্তব্য ও শর্ত জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিএনপিকে নির্বাচনি মঞ্চে দাঁড়াতে দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের মধ্যেও বিএনপির বিজয় ঠেকানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘যারা নতুন নতুন শর্ত দিচ্ছেন, তাদের বলব রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করুন। বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে জনগণের রায় প্রদানের পথ রুদ্ধ করবেন না।’
তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, ‘যে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে তাদেরকে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে, জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।’
তিনি প্রস্তাবিত প্রতিনিধিত্বমূলক পিআর ভোট পদ্ধতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন উপযুক্ত নয়। কারণ এতে কোনো ব্যক্তি বা দল নির্বাচিত হচ্ছে, তা জনগণ জানার সুযোগ পায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি বিশ্বের অনেক দেশে পিআর ভোট পদ্ধতি কার্যকর। কিন্তু বাংলাদেশের ভৌগলিক, রাজনৈতিক ও অর্থসামাজিক বাস্তবতায় এটি এখনই বাস্তবায়ন উপযোগী নয়। জনগণকে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করলে তা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। অতীতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পেছনে ধর্মীয় উদ্দেশ্য না থাকলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও অবৈধ স্বার্থ লিপ্ত ছিল। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের যাত্রাপথ ঝুঁকিমুক্ত নয়। বর্তমান সরকার পতিত স্বৈরাচারী শাসকের মতো বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। দেশের জনগণ যদি তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচিত করে, তাহলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিকৃতি রোধ করা সম্ভব।’
তিনি জানান, দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু ভিন্নমত থাকলেও তা গণতন্ত্রের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাধানযোগ্য।
তিনি রাজনৈতিক দল ও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে জনগণের আস্থা ও স্বচ্ছতার মূল্য অগ্রাধিকার দিয়ে চলতে হবে।