Saturday 23 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘হাসিনা আর জামায়াতের কারণে এরশাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হয়েছিল’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৪২ | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৫ ২০:৩০

ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড‍্যাব), চট্টগ্রাম শাখার এক অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: শেখ হাসিনা ও জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকার কারণে সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে নগরীর নাসিরাবাদ কনভেনশন হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড‍্যাব), চট্টগ্রাম শাখার এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন এবং ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচন পরবর্তী ভোটারদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচার হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আমাদের আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন- এরশাদের সঙ্গে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে বেগম জিয়ার এ ঘোষণার পর চট্টগ্রামের লালদিঘীর ময়দানে জনসভায় শেখ হাসিনাও একই ঘোষণা দেন। কিন্তু ঢাকায় ফিরেই হাসিনা এরশাদের সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন।’

বিজ্ঞাপন

‘অথচ বেগম খালেদা জিয়া তার ঘোষণায় অনড় ছিলেন, তিনি আপস করেননি, নির্বাচনে অংশ নেননি। কিন্তু শেখ হাসিনা ও জামায়াতে ইসলামী সেই নির্বাচনে অংশ নেয়। শেখ হাসিনা ও জামায়াতে ইসলাম নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এরশাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হয়েছিল। অন্যথায় এরশাদের পতন ১৯৮৬ সালেই হতো।’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সালে আন্দোলনের মুখে এরশাদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তখন বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ় নেতৃত্বে গঠিত হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। এরপরই মূলত এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার হয়। সে সময় আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। বেগম জিয়ার নেতৃত্বের কারণে সারাদেশে ছাত্রদল সুসংগঠিত হয়, প্রভাব বৃদ্ধি পায়। সেসময় বুয়েট, চট্টগ্রামের বিআইটি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়- সব ব্রিলিয়ান্ট ইনস্টিটিউশনে ছাত্রদলের জয়জয়কার দেখা গেছে। এমনকি ডাকসু নির্বাচনে আমান-খোকনের প্যানেল নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।’

‘এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নুর হোসেন, মোজাম্মেল, জেহাদসহ অনেকে শহিদ হন। বিএমএর যুগ্ম সম্পাদক ডা. মিলন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। পাশেই ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি কিন্তু অক্ষত ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদের পতন ঘটে। এ আন্দোলনে যদি যদি বেগম খালেদা জিয়া অনড় ভূমিকা না রাখতেন, তাহলে এরশাদের পতন এত সহজে সম্ভব হতো না।’

এরশাদের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন ভূমিকার কারণে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জনগণ ভুল করেনি এবং খালেদার গলায় বিজয়ের মালা পরিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেন শাহাদাত।

১//১১-এর প্রসঙ্গ টেনে চসিক মেয়র বলেন, ‘সেসময় মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে বিদেশে পাঠানো হয়। তিনি মনের আনন্দে হাতে মেহেদি নিয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে বলা হলেও তিনি দেশত্যাগ করেননি। তিনি বলেছিলেন-যদি বাঁচতে হয় এ দেশেই বাঁচব, মরতে হলে এ দেশেই মরব। মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নকারীদের কুকর্মের বৈধতা দিতে রাজি হওয়ায় ২০০৮ সালে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানো হয়। আর খালেদা জিয়া বৈধতা দিতে রাজি হননি বলে ১৬ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বিচারে হত্যা, গুম, মামলা-হামলার শিকার হতে হয়েছে।’

খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জেলে বন্দি রাখা হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার, মানবাধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন খালেদা জিয়া। এজন্য তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জেলে ঢোকানো হয়, গৃহবন্দি রাখা হয়। কিন্তু আল্লাহ যাকে সম্মান দিতে চান, তাকে অসম্মান করার সাধ্য কারও নেই। আজ রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যেতে হয় শেখ হাসিনাকে আর খালেদা জিয়া রাণীর মতো বিদেশে গেছেন, রাণীর মতো সম্মান নিয়ে দেশে ফিরেছেন।’

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়ার আহ্বান জানান চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন।

ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলমের সভাপতিত্বে ও ডা. রিফাত কামাল রনির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- সংগঠনটির চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আব্বাস উদ্দীন, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. জসীম উদ্দীন, ডা. এম এ মান্নান, অধ‍্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক চোধুরী, অধ‍্যাপক ডা. মো. আব্দুল মোত্তালিব, অধ্যাপক ডা. ইকবাল হোসেন, ডা. সুকান্ত ভট্টাচার্য, ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ডা. মো. ইব্রাহিম চৌধুরী প্রমুখ।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

জামায়াত হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর