ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য যে প্রস্তুতির দরকার সরকার সেই কাজ এগিয়ে নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. মনজুর হোসেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত `বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিদ্যমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পর্যালোচনা শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।
এদিকে সেমিনারে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ আরও তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ডিসিসিআই।
ড. মনজুর হোসেন বলেন, এলডিসি উত্তরণ সরকারি সিদ্ধান্ত। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য যে প্রস্তুতিমূলক কাজ করা দরকার, সেটা আমরা করে যাব। এ নিয়ে অনেক কমিটি কাজ করছে। প্রতি দুই মাস পর পর প্রধান উপদেষ্টাকে কার্যক্রম নিয়ে আপডেট দেওয়া হচ্ছে। এখন কাজ না করলে সেটা যদি ৫ বছর পেছায়, তখনো আমরা একই প্রস্তুতির অভাবের কথা বলে যাব। এর মধ্যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে, তখন তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, বর্তমান এলডিসি থেকে উত্তরণে খাতভিত্তিক উন্নয়নের কোনো সুনির্দিষ্ট কৌশল নেই। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাজার সুবিধা, বাণিজ্য সহজীকরণ, রফতানিমুখী উৎপাদন সহায়তা এবং রফতানি বৈচিত্র্যের মতো ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, একটি শক্তিশালী উত্তরণ কৌশল বাস্তবায়ন এবং নীতিগুলোকে হালনাগাদ করার জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা অন্তত ৩ বছর পিছিয়ে দেওয়া অপরিহার্য।
সেমিনারে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এলডিসি পেছালেও একদিন না একদিন সেটাতে যেতেই হবে। আর এটি পেছানোর জন্যও নানা প্রক্রিয়া ও একাধিক মূল্যায়নে অপ্রস্তুত দেখাতে হবে। এরপর সে সিদ্ধান্ত দেবে জাতিসংঘ। কিন্তু আমাদের অনেক ক্ষেত্রে এলডিসির শর্ত পূরণ হচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। এই মাথাপিছু আয় এ যাবৎকালের রেকর্ড। মৃত্যুহার কমেছে। এমন নানা ক্ষেত্রে সফলতা দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রস্তুতি নেই, কিন্তু কোনভাবে এলডিসি উত্তরণ হয়ে গেলে সেটা বড় আত্মঘাতী হবে। লাইসেন্স, প্যাটেন্ট চলে গেলে একটা ইনসুলিন কিনতে হবে আটগুণ দামে। অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। ফলে ক্রমাগত প্রস্তুতি দরকার, এলডিসি যখনই হোক।