চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নতুন কমিটি ঘোষণা হয়েছে। তবে কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতার অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য ৩২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির মাহমুদ ও সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আল-মাসনুন।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সুলতানুল আরেফিন, যুগ্ম আহ্বায়ক পদে শাহরিয়ার নাফিজ, স্বাধীন সিদ্দিকী, রাশেদুল ইসলাম, তানভীর হাসান এবং মো. উলফাতুর রহমান রাকিব। সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে আশরাফ চৌধুরী, যুগ্ম সদস্য সচিব পদে নাসরুল্লাহ মনসুর মুবিন, তানভীন কায়েস লিওন, ফয়সাল মিয়া, ফুয়াদ হোসেন ও নাসির আহমেদ দায়িত্ব পেয়েছেন। মুখ্য সংগঠক, সাব্বির হোসেন রিয়াদ। সিনিয়র সংগঠক, সোয়াইবুল ইসলাম। সংগঠক, ইমরান হোসেন, আশিকুল ইসলাম, সাইফ রাতুল ফয়জুর রহমান ও মো. তাওসিফ ইয়াসার রুদ্র। মুখপাত্র, জান্নাতুল মাওয়া মিথিলা ও সহ-মুখপাত্র নওশীন তাবাসসুম যূথী।
এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন– নিলয় দেব শান্ত, মো. নাঈম বিশ্বাস, মো. সাগর সোয়াদ নাফিউ, ওসমান গনি, সাইফুর ইসলাম আলিফ, জাহিদ উদ্দিন, সঞ্জিবনী গোলদার, ফরহাদ হোসেন রুপম ও মোস্তফা কামাল।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে আসা আশরাফ চৌধুরীকে নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বিরুদ্ধে একসময় ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) উপগ্রুপ সিএফসির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার একাধিক ছবি ও স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আশরাফ সিলেট-১ সংসদীয় আসনে ছাত্রলীগের সমন্বয়ক টিমের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও কেক কেটে ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে জন্মদিন পালন এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে তার অংশগ্রহণের ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
জানতে চাইলে আশরাফ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ আগস্টের আগে যারা হলে থাকতো, তাদের জোরপূর্বক ছাত্রলীগ করানো হতো। আমি তখন হলে ছিলাম, তাই অনিচ্ছা নিয়েই ছাত্রলীগ করতে হয়েছে। তাছাড়া হলে যাদের ফেসভ্যালু ছিল, তাদের মধ্যে অনেকের অজান্তেই গত নির্বাচনে ছাত্রলীগের সমন্বয়ক কমিটিতে নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আমি ছাত্রলীগ থেকে বের হয়ে যাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম ছেড়ে নিজ শহর সিলেটে চলে যাই। তারপর সেখানের সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়মিত আন্দোলন করেছি।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাগছাসের সদস্য সচিব আল মাসনূন বলেন, ‘আশরাফ ৫ আগস্টের আগে হলে থাকার সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে ছিল। তবে কোনো পদে ছিল না। আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ ত্যাগ করে আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে।’