ঢাকা: সংকটাপন্ন কয়েকটি ব্যাংকের কারণে পোশাক রফতানিকারকদের আর্থিক কার্যক্রমে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিজিএমইএ এর একটি প্রতিনিধিদল। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ এর প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন- বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফাহিমা আক্তার, পরিচালক এ.বি.এম. সামছুদ্দিন, রিও ডিজাইন লি. এর চেয়ারম্যান মো. হারুক আহমেদ, ও’ডেল অ্যাপারেলস লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মোহিত, ডে অ্যাপারেলস লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনওয়ার হোসেন পাটওয়ারি এবং একেএইচ ফ্যাশন লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল আলম।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি গভর্নরের কাছে পাঁচটি সংকটাপন্ন ব্যাংকের কারণে পোশাক রফতানিকারকরা বর্তমানে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সংকটপন্ন ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকটে থাকার কারণে ব্যাংকগুলো রফতানি আয় (প্রত্যাবসিত রফতানি মূল্য) আসলেও সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকদেরকে সেই অর্থ সময়মতো পরিশোধ করছে না। এমনকি ব্যাংকগুলো নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতেও ব্যর্থ হচ্ছে। এতে করে সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানাগুলো দারুন আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষীন হয়ে নিয়মিত কার্যক্রম ও রফতানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। বিশেষ করে কারখানাগুলো সময় মতো শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে না পারার কারণে শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে, যা আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মভাবে ক্ষুণ্ন করছে, সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের বাংলাদেশের প্রতি আস্থাও কমাচ্ছে, যা শিল্পের জন্য মোটেও শুভ নয়।’
বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে অনেক প্রতিষ্ঠান সহসাই রুগ্ন শিল্পে পরিনত হবে। ফলশ্রুতিতে অনেক শ্রমিক ভাইবোন কর্মসংস্থান হারাবে। সর্বোপরি, দেশের প্রধান রফতানি খাত আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, যা মোটেও কাম্য নয় ‘
বিজিএমইএ সভাপতি এই জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
গভর্নর বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের উদ্বেগ গুরুত্ব সহকারে শোনেন এবং এই সমস্যার একটি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘সাময়িকভাবে ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের প্রাপ্য টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে রফতানিকারকদের জরুরি আর্থিক চাহিদা মেটানো যায়। পরবর্তীতে, সমস্যাটির একটি স্থায়ী ও চূড়ান্ত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বিজিএমইএ সভাপতি আশা করেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে, পোশাক শিল্পে বিরাজমান আর্থিক অনিশ্চয়তা দূর হবে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসবে।