ঢাকা: ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর হাতে রণ-তূর্য!’— কবিতার এমন পঙ্ক্তিতে যিনি দ্রোহের উন্মাদনায় মত্ত হয়েছিলেন, আবার ঠিক তেমনি গানে গানে প্রিয়ার প্রতি ভালোবাসার ব্যাকুলতা প্রকাশে লিখেছিলেন, ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানী দেব খোঁপায় তারার ফুল।’— তিনি প্রেম, দ্রোহ, সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
আজ বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৩৮৩ সনের এই দিনে (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণের প্রতীক কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর পর সামরিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।
এভাবেই কবির বিখ্যাত গজল ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই/যেন গোর থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’ সত্যি সত্যে পরিণতি লাভ করে। কবির ‘চল্ চল্ চল্’ গানটি বাংলাদেশের রণসংগীত।
জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সকাল ৮টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি।
বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক।
আলোচনায় অংশ নেবেন নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। এতে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তিশিল্পী টিটো মুন্সী। নজরুলগীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহীদ কবির পলাশ এবং তানভীর আলম সজীব।
এছাড়া, রাজধানীসহ দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। কবির মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাজানো এসব আয়োজন।