রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জে অজ্ঞান পার্টি সন্দেহে দলিত সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি রূপলাল দাস ও প্রদীপ কুমার দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) মধ্যরাতে র্যাব-৭ এর সহযোগিতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা সদর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মরহুম মোবরক আলীর ছেলে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ভিডিও ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিকে শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে এই মামলায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন—চরকডাঙ্গা বালাপুরের আখতারুল ইসলাম, রহিমাপুরের মিজানুর রহমান, বুড়িরহাট ডাঙ্গাপাড়ার রফিকুল ইসলাম, সয়ার বালাপুরের ইবাদত আলী এবং মণ্ডলপাড়ার শাহজালাল। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজে তাদের সবাইকে শনাক্ত করা গেছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ৯ আগস্ট রাতে ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার পথে রূপলাল ও প্রদীপকে স্থানীয়রা সন্দেহ করে আটক করে। ব্যাগে স্পিড ক্যানের বোতল ও ওষুধ জাতীয় দ্রব্য মেলার পর উত্তেজিত জনতা তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে মারধর করে। এতে গুরুতর আহত দুজনের মধ্যে রূপলাল দাস সেদিন রাতেই মারা যান এবং প্রদীপ কুমার দাস ভোরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত রূপলালের স্ত্রী মালতী রানী ৫০০-৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তার অজ্ঞাতসারে এজাহার তৈরি করে সই নিয়েছে।
ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই এসআই ও ছয় কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি তদন্তে সহকারী পুলিশ সুপার আসিফা আফরোজ আদুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম বলেন, ‘ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ছয়জন গ্রেফতার হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’