Monday 01 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে- এ প্রশ্ন এখন সবার মধ্যে: ড. দেবপ্রিয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৭ | আপডেট: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:০৭

সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’-এর সূচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এর আহ্বায়ক ও  সিপিডি’র সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য – (ছবি : সংগৃহীত)

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে- এমন প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এর আহ্বায়ক ও  সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে একটা বড় ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে সেই ঝড় অনুভূত হচ্ছে। আমার দৃষ্টিতে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যে বৈষম্যবিরোধী চেতনা পেয়েছি, এটা বাংলাদেশের বড় সম্পদ—যেটিকে এই ঝড় থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন।

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব সংস্কার প্রস্তাব এসেছিল, সেগুলো মাঝে যেন আর এগোতে পারল না। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে- এ প্রশ্নটি এখন সবার মধ্যে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’-এর সূচনা অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত: অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি’র চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র সিনিয়র গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কারের জন্য অনেকগুলো কমিটি গঠন করছে। আমারও সৌভাগ্য হয়েছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কাজের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার। তারপরও কেন এই প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন হলো? আমরা যে উচ্ছ্বাস নিয়ে সরকার ও সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম, সে উচ্ছ্বাস ও উৎসাহ এখন কিছুটা স্তিমিত হয়ে গেছে। এটা কি আকাঙ্ক্ষার অভাব, নাকি স্বার্থের সংঘাত, নাকি অন্য কিছু? অন্যদিকে আমরা দেখেছি, সংস্কার প্রক্রিয়ায় যেসব কমিটি হলো, সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন পর্যায়ের অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ছিল না।

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কারিগরি জ্ঞান অনেকেই দিতে পারেন, কিন্তু বাস্তবায়নের বিষয়টি আলাদা। বাস্তবায়ন করার জন্য দরকার জবাবদিহিতামূলক নাগরিক চাহিদা।
তাই সংস্কারের এই চাহিদা তৈরি করার জন্য আমরা সামাজিক কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আজকের এ উদ্যোগ নিয়েছি।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যারা সংস্কার করবেন, তারা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তা ছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কার বিরোধিতা বা সংস্কারবিরোধী শক্তিগুলো সরকার ও সমাজের মধ্যে রয়ে গেছেন। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের বদলেছে কি না বা অঙ্গীকারবদ্ধ কি না- সেটাও দেখতে হবে। তারপরও ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ নির্বাচন এবং এরপরও রাজনৈতিক দলগুলোকে জবাবদিহি করতে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করি।

সিপিডি’র সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৯১ সালে…২৯টা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। তখন অনেক সংস্কার প্রস্তাব এলেও সেগুলোর সব বাস্তবায়ন হয়নি। অনেক ধাক্কার পর জুলাই অভ্যুত্থান আমরা দেখেছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। গত এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোল? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার কতটুকুই-বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ উদ্যোগ শুরু করছে, এর মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডি’র সিনিয়র গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোল? জুলাইয়ের পর আমরা সাধারণ মানুষের কথা শোনার চেষ্টা করেছি। এর ধারাবাহিকতায় আজকের এই রিফর্ম মঞ্চের যাত্রা শুরু।

সারাবাংলা/আরএস

‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’-এর সূচনা ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিজ্ঞাপন

ছয় দফা দাবিতে আজও উত্তাল বাকৃবি
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর