ঢাকা: বিদেশী কূটনৈতিক, উন্নয়ন সহযোগী ও প্রধান রফতানি বাজারের (ইইউ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স্ ফেডারেশন (বিইএফ)।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের পুলিশ প্লাজা কনকর্ড অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে ওই সভা হয়। এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিইএফ-এর নতুন নির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া ও পারস্পরিক স্বার্থসম্পর্কিত শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মত বিনিময় করা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর ত্রিপক্ষীয় অঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের মালিকদের সংগঠন বিইএফ আন্তর্জাতিক শ্রমমান ও মৌলিক শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ উপলক্ষে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়, যা একটি স্থিতিশীল শ্রমবাজার, উত্তম কর্মপরিবেশ ও উন্নত শ্রম শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
বিইএফ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান তার স্বাগত বক্তব্যে প্রতিশ্রুতি পূরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং একই সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তনশীল শ্রমবাজার ও জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মালিক ও বিনিয়োগকারীদের সামনে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলোকেও সামনে আনেন। বিইএফ-এর মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহাম্মাদ, ফেডারেশনের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে অতিথিদের প্রাথমিক ধারণা দেন, যার মধ্যে রয়েছে শ্রম আইন সংস্কার নিয়ে অ্যাডভোকেসি, দক্ষতা উন্নয়ন, এবং প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি।
পরবর্তীতে একটি উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক রূপান্তরে প্রদত্ত সহায়তার অগ্রাধিকার, প্রত্যাশা ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন। আলোচনায় ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (বিএলএ) এর ত্রিপক্ষীয় পর্যালোচনা ও সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং আইএলও-এর গভার্নিং বডির রোডম্যাপের অধীনে সরকারের গৃহীত সংস্কারের মূল ভিত্তি।
কূটনৈতিক মিশনসমূহ সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায় ও সমর্থন প্রকাশ করে। সেই সঙ্গে আশা করে যে, অক্টোবরের মধ্যে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমমানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিএলএ’র সংশোধন পাস করা হবে। তারা আরও জোর দিয়ে বলেন যে, শ্রম অধিকারের অগ্রগতি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়াবে এবং কোম্পানিগুলোর সুনামহানির ঝুঁকি হ্রাস করবে। তবে মালিকরা মত প্রকাশ করেন যে, এসব মন্তব্য সদিচ্ছা থেকে আসলেও তা মূলত বাইরের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রত্যাশার ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত, দেশীয় অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জগুলোর যথাযথ প্রতিফলন ঘটায় না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকব্সন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের প্রধান মহামান্য মাইকেল মিলার, ব্রিটিশ হাই কমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার মহামান্য জেমস গোল্ডম্যান, কানাডার চার্জে দ্য অ্যাফেয়ার্স মহামান্য ডেব্রা বয়েস, আইএলও প্রতিনিধি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইডেনের প্রতিনিধিরা, বিভিন্ন এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ যেমন বিইকেএমইএ সভাপতি, বিজিএমইএ প্রতিনিধি, বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান, এবং বিইএফ কমিটির সদস্যরা।
অংশগ্রহণকারীরা এই গঠনমূলক সংলাপকে স্বাগত জানান ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান, প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের বৃহত্তর সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে এ ধরনের সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার পারস্পরিক আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিইএফ উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি তাদের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।