ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর রোডম্যাপের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আকাশ। তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’র বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক। তার সহযোগী আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি রেখে চলে গেলেও গত দুইদিন ধরে একাই অবস্থান কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছেন তিনি।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১২ টা পর্যন্ত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এর আগে রোববার সকাল ১০ টা থেকে তিনি এ কর্মসূচি শুরু করেন।
আবাসন সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরে আশিকুর রহমান আশিক বলেন, ‘জবির ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সকালে ঠিকমতো কিছু খেতেও পারেন না। পুরানো ঢাকায় বসবাসের কারণে তাদের প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়, যা টিউশন বা অন্যান্য মাধ্যমে সংগ্রহ করতে গিয়ে তারা মানসিক সমস্যায় ভোগেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। অনেক জুনিয়র শিক্ষার্থী দু’বেলা খাবারও ঠিকমতো খেতে পারেন না এবং দূরদূরান্ত থেকে এসে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে তাদের জীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, অনেক শিক্ষার্থী জগন্নাথে ভর্তি হওয়ার পর তা চালিয়ে যেতে না পেরে গ্রামের বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছেন, যা সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি ‘লজ্জাজনক অবস্থা’।
প্রশাসনের বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রশাসন আবাসন সমস্যা নিরসনে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। পূর্বে প্রশাসন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তারা সুস্পষ্ট কোনো প্রক্রিয়া বা তথ্য জানায়নি। কে এই সুবিধা পাবে, কত টাকা দেওয়া হবে, বা কোন প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে এসব বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা নেই।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “প্রশাসনের জায়গা থেকে এই বিষয়গুলো আমরা বসার আগে আমরা বলার আগে স্পষ্ট করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব ছিল।”
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত এমন কোন কাজ তারা করতে পারে নাই যার কারণে বলতে পারে যে প্রশাসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী বান্ধব কোন কাজ করেছে।” শিক্ষার্থীদের মানবিক জীবনযাপন নিয়ে প্রশাসনের আসলে কোনো ‘চিন্তা ফিকেন নাই’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আমি অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এইটা না আদায় হওয়া পর্যন্ত যদি আমার একাও বসে থাকতে হয় আমি বসে থাকব ইনশাআল্লাহ। উনারা যদি এটা কর্মপাত না করে আমি কঠিন থেকে কঠিন আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য হব।’