ঢাকা: নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত শ্রমিক মো. হাবিব রহমানের হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় তীব্র সমালোচনা করেন।
বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, ‘সেনাবাহিনী আজ শ্রমিক হত্যা করেছে, অথচ এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিপন্ন অবস্থায় থাকলেও তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। একইভাবে পুলিশ প্রশাসনও ধর্ষণ, মব ভায়োলেন্স কিংবা পাহাড়ে আদিবাসীদের ওপর হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে।’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শ্রমিক আন্দোলন দমন, পাহাড়ে আদিবাসী উচ্ছেদ ও জনগণের ওপর দমননীতি প্রয়োগে সেনাবাহিনীর ভূমিকা স্পষ্ট। গত এক বছরে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে সেনারা জনগণের ওপর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে বলেও তারা দাবি করেন।
সমাবেশে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আরেফিন সৌরভ বলেন, ‘ইতিপূর্বে রাবার বুলেট ব্যবহার হত, কিন্তু এখন সরাসরি বুলেট চালানো হচ্ছে। সরকার শ্রমিকদের ওপর দমননীতি চালাচ্ছে। যেই রাষ্ট্র শ্রমিককে মারে, সেই রাষ্ট্র ভেঙে দিতে হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রটের সাধারণ সম্পাদক মারুফ বলেন, ‘সেনাবাহিনী আজ শ্রমিকদের আন্দোলনে গুলি করে শ্রমিক খুন করেছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা দেখলাম সব শ্রমিক আন্দোলন দমনে সেনাবাহিনীর কঠোর অংশগ্রহণ এবং গুলি করে শ্রমিক হত্যার ঘটনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়ে যা এক্সপেরিমেন্ট হয়, সমতলে তা ইমপ্লিমেন্ট হয়। এই সেনাবাহিনী এবং এই রাষ্ট্রব্যবস্থা, সেনাবাহিনী যার অংশ, জনগণের বিরুদ্ধে এবং পুঁজিপতি-মালিকশ্রেণির পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তাই শ্রমিকের অধিকারের বিরুদ্ধে তারা গুলি চালায়। গত এক বছরে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার পর থেকে সেনাবাহিনী এ দেশের মানুষের উপর যেইরূপে নিপীড়ন করেছে। তাতে প্রমাণ করে যে সেনাবাহিনী আসলে ক্ষমতাসীন পুঁজিপতিদের স্বার্থ কায়েমে কাজ করে এবং ক্ষমতার স্বার্থ রক্ষায় তারা সাধারণ মানুষকে খুন করতেও পিছপা হয় না।’