Thursday 04 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকসু ঘিরে আ.লীগের নতুন ষড়যন্ত্র, মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ

উজ্জল জিসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:৫৬ | আপডেট: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৪২

বাংলাদেশ পুলিশ। ফাইল ছবি

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আসছে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে— এমন তথ্য পেয়ে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নড়ে চড়ে বসেছে। এরই মধ্যে পুলিশের আইজিপি বাহালুল ইসলাম ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের নতুন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

ডাকসু নির্বাচন যাতে কোনোভাবে ঠেকাতে না পারে সেজন্য ঢাবি ক্যাম্পাস ও এর আপশপাশে নিরাপত্তা জোরদার, ২৪ ঘণ্টা একাধিক পয়েন্টে একাধিক অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ মোতায়েন, রায়ট কার, এপিসিসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা, পেট্টোলিং ব্যবস্থা আরও বেশি জোরদারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। সেই আলোকে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবার আগে ডাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করেছে আওয়ামী লীগ। এরপর অন্যান্য নির্বাচনগুলো ঠেকানোর পায়তাঁরা রয়েছে তাদের। তবে, সবকিছু মোকাবিলার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।’

তিনি বলেন, ‘রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তাঁরা এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। গত রোববার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল হয়। সেই মিছিল থেকে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেফতারের পর ভয়ংকর পরিকল্পনার কথা জানতে পারে পুলিশ। আওয়ামী লীগ দেশকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র করছে তা ফাঁস করে দেন ওই নেতা।’

গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতার বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সারাদেশের পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নারীর ওপর হামলা, ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো, বিভিন্ন গার্মেন্টসে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি, প্রয়োজনে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার বিষয়টিও ষড়যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে।’

এরই মধ্যে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) নীলফামারীতে সেনাসদস্যদের ওপর শ্রমিকদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর ১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকায় আদাবরে চাপাতি দিয়ে পুলিশ সদস্যকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা শেষ না হতেই ময়মনসিংহ কৃষি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম হামলার পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া, নুরের ওপর হামলাকেও একধরনের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে সরকার।

এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? জানতে চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজধানীর ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশে পুলিশ সতর্ক পাহারায় রয়েছে। এরসঙ্গে সেনা সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। এমনকি গোয়েন্দারাও কাজ করছে। দ্রুত অ্যাকশনে যাওয়ার মতো পরিকল্পনাও রয়েছে। ডিসি-এসপিদের সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়েছে। সতর্ক থেকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরে কাজ করতে বলা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলগুলোও এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। ১ সেপ্টম্বর গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ২২ দলের নেতারা বৈঠক করেন এবং একসঙ্গে হাত উঁচু করে জানান দেন, এখন থেকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে তারা এক কাতারে থাকবেন। কোনোভাবেই যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ ও তার দোসর জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সবাই একমত হন।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

আওয়ামী লীগ ডাকসু নতুন ষড়যন্ত্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর