চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্থানীয় গ্রামবাসী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে গণগ্রেফতার ও অহেতুক কাউকে হয়রানি না করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য পাঠানো এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এ দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা সংঘর্ষের ঘটনা ও মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেফতার বাণিজ্য, গণগ্রেফতার এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির আশঙ্কা করে বলেন, ‘শিক্ষার্থী এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে কেউ যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, আমরা সেটাই প্রত্যাশা করছি। একইসঙ্গে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণগ্রেফতার, মামলা বাণিজ্য, গ্রেফতার বাণিজ্য যাতে না হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি।’
সংঘর্ষের ঘটনাটি দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘আমরা সিপিবির পক্ষ থেকে পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। কেন সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলো এবং ঘটনা কীভাবে এতদূর গড়িয়ে যেতে পারল, নেপথ্যে কারও কোনো উসকানি আছে কি না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অবহেলা-উদাসীনতা আছে কি না, ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত জড়িত কারা- সব বিষয় বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসুক।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনের ভাড়াটিয়া এক ছাত্রী রাতে বাসায় প্রবেশ নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ওইদিন রাতে এবং পরদিন রোববার সকাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর দফায়, দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত তিন শতাধিক আহত হন, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন সদস্য এবং একজন উপ-উপাচার্যও আছেন।
দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষের একপর্যায়ে রোববার দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) আব্দুর রহিম বাদী হয়ে মঙ্গলবার হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। এতে ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৮০০ থেকে ১ হাজার জনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রামবাসীদের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।