ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং কমিশনের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানে তাকে যেকোনো পদে নিয়োগ করা থেকে বিরত থাকার কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। বিএসইসি সূত্রে এ ই তথ্য জানা গেছে।
বিএসইসির সূত্র জানায়, বুধবার এই সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি হয়েছে। বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর আদেশ নং BSEC/IEID/Enquiry/2024/437 এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) ৩ হাজার কোটি টাকার ৫ বছর মেয়াদি বেক্সিমকো সিকিউর্ড কনভার্টিবল অর রিডিমেবল অ্যাসেট-ব্যাকড গ্রীন সুকুকের বিষয় নিয়ে তদন্ত হয়। গঠিত এই কমিটি কমিশনের কাছে তদন্ত ও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত গ্রীন সুকুকটি ২ হাজার ২৫০ কোটি প্রাইভেট (৭৫০ কোটি বিদ্যমান শেয়ার হোল্ডারদের নিকট হতে এবং ১ হাজার ৫০০ কোটি বিদ্যমান শেয়ার হোল্ডারদের ব্যতিত অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের নিকট হতে) এর মাধ্যমে এবং ৭৫০ কোটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যুর জন্য অনুমোদিত হয়। এই বন্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে প্রতারণামূলক সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের আচরণ, অসৎ পদ্ধতিতে করা একটি পদক্ষেপের স্পষ্ট উদাহরণ। যা একটি গোপন উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সামগ্রিক উন্নয়নকে প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত করছে। ভবিষ্যতেও করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণে পুঁজিবাজারের সব বিনিয়োগকারী এবং বাজারের স্বার্থে, কমিশন মনে করে যে, শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ বাজার সম্পর্কিত কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখার জন্য তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন রয়েছে।
সেই কারণে এখন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর ধারা ২০ এবং ধারা ২০ক দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে, কমিশন পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করছে। যার ফলে বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ বাজারের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং অযোগ্য হবেন তিনি। কমিশন বলছে. এই আদেশ জারির তারিখ থেকে কার্যকর করতে হবে।
কমিশন বলছে, তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে যেকোনো সিকিউরিটিজ বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, যেকোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি (স্বাধীন পরিচালক, উপদেষ্টা বা পরামর্শদাতা সহ), ট্রাস্ট, সংস্থা, বা সত্তার মধ্যে যেকোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকার অযোগ্যতা যার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন রয়েছে। এবং স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, যেকোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি, ট্রাস্ট, সংস্থা, বা কমিশনের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্য যেকোনো সত্তার যেকোনো প্রাঙ্গণ, অফিস, বা অফিসিয়াল কার্যক্রম বা প্রোগ্রামে প্রবেশ বা তার সাথে যোগাযোগ করার নিষেধাজ্ঞা কমিশন জারি করছে। আদেশ জারির পর থেকে কমিশনের সিদ্ধান্ত পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।