ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড সরানোর দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও যোগদান করেন।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে জড়ো হয়ে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করে। শান্ত চত্বর থেকে শুরু করে কাঁঠাল তলা ও বিজ্ঞান অনুষদ অতিক্রম করে মেইন হয়ে রায় সাহেব বাজারের ঘুরে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে মিছিলটি।
রাজধানীর সদরঘাটগামী সব ধরনের বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট, দ্বিতীয় গেটের আশপাশে অবৈধভাবে দখল করে দাঁড়িয়ে থাকেন। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা এবং দুর্ঘটনা কবলে নিয়মিতই পড়তে হয়। এ সমস্যায় দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর ফুলেফেঁপে ওঠেন শিক্ষার্থীরা।
পদযাত্রায় শিক্ষার্থীরা ‘জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘অবৈধ বাসস্ট্যান্ড থাকবে না’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর বাসস্ট্যান্ড নো মোর’, ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘দড়ি ধরে মারো টান সিন্ডিকেট হবে ক্ষান ক্ষান’, ‘ক্যাম্পাস আর বাসস্ট্যান্ড একসঙ্গে চলে না’ এসব স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বাহাদুর শাহ পার্ক ও এর আশপাশের বাসগুলো যত্রতত্র পার্কিং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানজটের সৃষ্টি করে। একইসঙ্গে প্রায়শই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
এ সময় জবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত তুশিন বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে এই অবৈধ বাসস্ট্যান্ড নানা অসুবিধার সৃষ্টি করছে। কয়েক দিন আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী বাসচাপায় গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া, তীব্র যানজটের কারণে আমরা অনেক সময় সঠিক সময়ে ক্লাসে পৌঁছাতে পারি না। আমরা এই অবৈধ বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা একটি ন্যায্য দাবিতে একত্রিত হয়েছি। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একটি অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়। একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে কোনো অবৈধ বাসস্ট্যান্ড থাকতে পারে না। এই বাসস্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে এখানে চাঁদাবাজি হয় এবং মাদকের আখড়া বসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি গত কয়েকদিন আগে আমাদের এক নারী শিক্ষার্থী দুই বাসের মাঝখানে চাপা পড়ে আহত হন। আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অন্তত পাঁচবার পরিবহনের সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হয়নি।’
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা সভায় বসেছেন পরিবহণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন, ভিসি মহোদয় ও পরিবহন সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামীকাল থেকে রায়সাহেব বাজার দিয়ে কোনো বাস ক্যাম্পাসে ঢুকবে না। রায় সাহেব বাজার ক্রস করে কোনো বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ধাবিত হয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে না।’