Sunday 07 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশাসনের মধ্যস্থতায় হাটহাজারীতে কওমি-সুন্নি সমঝোতা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৩৪ | আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:২৩

হাটহাজারীতে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে পর সমঝোতা। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় বিবদমান কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীদের মধ্যে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে উভয়পক্ষ শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়েছে। এতে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদরাসা) মাদরাসা কর্তৃপক্ষ, আহলে সুন্নতে ওয়াল জামাআত, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারি সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবপক্ষের উপস্থিতিতে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। উভয়পক্ষ তাদের দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এবং মাদরাসায় শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরবর্তীতে যেকোনো অনুষ্ঠানের আগে উভয়পক্ষ বসে করণীয় ঠিক করবেন। উভয়পক্ষের স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। তারা পুলিশকে সহযোগিতা করবে। এছাড়া, হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড থেকে র‌্যাব কার্যালয় পর্যন্ত সড়কে কোন ধরনের মাইক, বাদ্য বাজনা বাজানো থেকে সবাই বিরত থাকার কথা বলেছেন।’

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে শনিবার রাতে সংঘর্ষে আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আজিজ। বৈঠকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি ছিলেন।

এর আগে, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের মূল কেন্দ্র হিসেবেখ্যাত আলোচিত আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদরাসা) মাদরাসার সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। ক্রমে সেটা আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে কওমি শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডে বাসসহ একাধিক যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ অবস্থায় শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও সুন্নী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে রাত ১২টা পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তারা প্রথমে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। সেখান থেকে গুরুতর আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

পুলিশের ভাষ্যমতে, শনিবার সকালে হাটহাজারী মাদরাসার সামনে এক যুবক আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এ নিয়ে ওই মাদরাসাসহ কওমি ঘরানার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তখন ওই যুবক ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দেন। উত্তেজনার প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানা পুলিশ আরিয়ান ইব্রাহীম (২০) নামে ওই যুবককে আটক করে। সন্ধ্যা ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকিয়া দরবার শরীফ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তার বাড়ি ওই এলাকায়।

কিন্তু ততক্ষণে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বের হয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন। আহলে সুন্নতপন্থীরাও পালটা বিক্ষোভ শুরু করে ওই এলাকায়। এতে উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। রাত ১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

কওমি-সুন্নি সমঝোতা প্রশাসন হাটহাজারী

বিজ্ঞাপন

জাতীয় খো খো-তে আনসারের শিরোপা জয়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:২৮

আরো

সম্পর্কিত খবর