ঢাকা: ছোটখাটো অভিযোগ, পালটা অভিযোগ ছাড়া সারাদিন শান্তিপূর্ণভাবে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সন্ধ্যার পর ফলাফল প্রকাশের অনুষ্ঠান ঘিরে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বাড়তে দেখা গেছে। এ সময় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে অশালীন বাক্য ছুড়তে দেখা গেছে।
এদিকে ক্যাম্পাস এলাকায় যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি যেমনই হোক আমরা তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। কে শিবির আর কে ছাত্রদল আর কে অন্য দল তা দেখার সময় থাকবে না। সারাদিন পরিস্থিতির খুবই ভালো ছিল। আশা করছি রাতেও তা বহাল থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলেও তা প্রতিহত করবে পুলিশ।
ভোটগ্রহণ শেষে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে যায় ভিসির সঙ্গে দেখা করতে। সিনেট ভবনে ভিসির সঙ্গে বৈঠকের সময় ভিসি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উচ্চবাচ্য বিনিময় হয়। এরপর ছাত্রদল নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানায়। তাদের অভিযোগ, ছাত্রশিবির ভোট কারচুপি করেছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের আশপাশে বিপুল সংখ্যক জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মী জমায়েত করেছে। যা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এসব বিষয়ে ভিসি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অন্যদিকে পালটা সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রশিবিরও। তাদের অভিযোগ, ছাত্রশিবির কখনো ভোট কারচুপি করে না। অতীতেও করেনি ভবিষ্যতেও করবে না। বরং প্রশাসনকে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস এলাকায় জড়ো হতে থাকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।
সন্ধ্যার পর থেকে নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি এবং জামায়াতের দুই গ্রুপ নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া শাহবাগ মোড়, টিএসসি এলাকা ও দোয়েল চত্বর এলাকা দুই দলের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় নেতাকর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় ক্যাম্পাস এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থমথমে।
রাত আটটার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফলাফল ঘিরে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।’
রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেখা গেছে, ক্যাম্পাস এলাকার সকল গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্তও তল্লাশি করা হচ্ছে। বহিরাগত কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।