সিলেট: রাজনীতি জনসেবার মাধ্যম হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেনের (লেচু মিয়া) কন্যা এবং বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সৈয়দা আদিবা হোসেন। তিনি বলেছেন, আমি রাজনীতি করি জনগণের জন্য, নিজের জন্য নয়। আপনারা এমন প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না, যে রাজনীতিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ এলাকায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিবা হোসেন বলেন, ‘দেশের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। তারা সৎ এবং হালাল উপার্জন করে। অথচ মন্ত্রীরা বিদেশে সম্পদ গড়েছেন। এটি শুধু দুর্নীতি নয়, বরং একটি জাতির স্বপ্নের বিরুদ্ধে অপরাধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫টি বছর ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপরি অসংখ্য মানুষকে হত্যা-গুম করেছে। হাজার হাজার গায়েবি মামলা দিয়ে ঘর-বাড়িতে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। কিন্তু এই দল জাতীয়তাবাদী শক্তির দল। এ দলকে কখনো দাবায়ে রাখা যাবে না। তারেক রহমানের ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব ও নির্দেশে আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে রাজপথে ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।’

সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী লেচুকন্যা সৈয়দা আদিবা হোসেন। ছবি: সারাবাংলা
লেচু মিয়ার কন্যা বলেন, ‘দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর পর দলের ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের জন্য কাজ করে, আগামী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে বিজয় লাভ করে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে হবে।’
নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখন আর বিরল নয়। কিন্তু, মাঠ পর্যায়ে থেকে প্রতিনিয়ত কর্মীদের সঙ্গে কাজ করার মতো উদ্যমী নারী নেত্রী খুব কমই দেখা যায়।’
আদিবা হোসেন তার বাবাকে স্মরণ করে বলেন, ‘আমার বাবা জীবদ্দশায় গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি চাইতেন, একটি শিশুও যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। আমি বাবার মতো দুই উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় অনেকে বলেন, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এলে আমরা থাকব। আমি বলি, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এলেও থাকব, না এলেও থাকব। আসল কথা হচ্ছে, আমি আমার বাবার অসাপ্ত কাজগুলো করে যেতে চাই।’

সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী লেচুকন্যা সৈয়দা আদিবা হোসেন। ছবি: সারাবাংলা
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি চাই তরুণ, প্রবাসী সবাইকে নিয়ে একটি আধুনিক, সহনশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা গড়ে তুলতে। আমার স্বপ্ন এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারবে।’ তার এই বক্তব্যে উঠে আসে সামাজিক সচেতনতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিষ্কার রূপরেখা।
৬ নম্বর ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সভাপতি মাহি আহমদ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহিদুর রহমান রাজুর সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলালুজ্জমান হেলাল, গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমদ তুরু, যুগ্ম সম্পাদক কামরান আহমদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি কামাল আহমদ নুর, সহ-সভাপতি রাজু আহমদ, শিবলু আহমদ, ফুলবাড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি ইজ্জত আলী, লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি শাহেদ আহমদ রিপন প্রমুখ।