Thursday 11 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থ বিভাগের পরিপত্র
বাজেট বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে অর্থছাড় বন্ধের নতুন শর্ত আরোপ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৩ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৪

ঢাকা: সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আর বাজেট সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অর্থবছরের শুরুতেই প্রান্তিকভিত্তিক বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রতিবেদন তৈরিতে পৃথক পৃথক নির্ধারিত ফরমও রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলেছে, নির্ধারিত ফরম ব্যবহার করে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। এছাড়া প্রত্যেক প্রান্তিক (তিন মাস) শেষ হওয়ার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে বাজেট বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ‘বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা’র মেন্যুতে সকল এন্ট্রি সম্পন্ন না হলে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে অর্থছাড় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের (জুলাই-মার্চ) মধ্যে বাজেট/সংশোধিত বাজেট বরাদ্দের ৬০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব না হলে চতুর্থ প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অর্থছাড় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে জারিকৃত ‘বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিবীক্ষণ’ শীর্ষক পরিপত্রে অর্থছাড় বন্ধের এ নতুন শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সময় মত বাজেট বাস্তবায়ন, বাজেট বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা ও সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অর্থছাড় বন্ধে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাজেট বাস্তবায়ন সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে ধীরগতিতে চলে। একইভাবে অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্যান্য সব আইটেমের বিপরীতে ব্যয়ের পরিমাণও কম থাকে। বিশেষ করে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মেরামত সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্ত কাজ এবং মালামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে অর্থবছরের শেষদিকে পদক্ষেপ নেয়া হয়। প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতি না রেখে অর্থ অবমুক্ত ও ব্যয় করা হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। সরকারের সীমিত সম্পদের অপব্যবহার ও অপচয় এবং নানা অনিয়মের সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু বছরের শেষে এসে সরকারকে অপরিকল্পিত ঋণের দায়ভার গ্রহণ করতে হয়। ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায় না।

পরিপত্রে বলা হয়, অনুমোদিত বাজেট সুষ্ঠুভাবে ও সময়মত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অপরিকল্পিত সরকারি ঋণ এড়ানো এবং সরকারের ঋণজনিত ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনা সম্ভব। রাজস্ব প্রাপ্তি ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠু নগদ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এমনভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে- যাতে ব্যয় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সমভাবে বিভাজিত হয় এবং শেষ ত্রৈমাসিকে বিল জমে যাওয়ার পরিস্থিতি পরিহার সম্ভব হয়।

এ বিষয়ে পরিপত্রে আরও বলা হয়, প্রত্যেক মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে আগের মাসের সরকারের সব ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে প্রত্যেক কোয়ার্টারে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ প্রদর্শন করতে হবে। একইভাবে সরবরাহ ও সেবা খাতে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য আইটেমের ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোর ব্যয়ের প্যাটার্ন বিবেচনায় নিয়ে তিন মাসভিত্তিক বরাদ্দ নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টার থেকেই সব ধরনের সরকারি কাজের মেরামত ও সংরক্ষণ কাজ শুরু করতে হবে। যাতে বিভিন্ন কোয়ার্টারে এসব কাজের বিল পরিশোধে ভারসাম্য বজায় থাকে এবং অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে বিল পরিশোধের চাপ সৃষ্টি না হয়।

অন্যান্যের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্য সব আইটেমের বিপরীতে তিন মাস অন্তর সমানুপাতিক হারে ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের বর্ধিত (বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট) বেতনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।

সারাবাংলা/আরএস

বাজেট বাস্তবায়ন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর