ঢাকা: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন-এর সঙ্গে কাজ করবে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস ফাইন্যান্সিং।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) মাইডাস ফাইন্যান্সিং-এর কার্যালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও ফাইনান্সিং-এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. খাইরুল বাশার সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
সমঝোতার স্মারকের আওতায় খাত ও উপ-খাতভিত্তিক এবং পণ্যের বাজারভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা, শিল্প প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় পরিকল্পনা তৈরি, পণ্যের বিপণন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও অর্থায়ন, ঋণ ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।
উল্লেখ্য, এসএমই ফাউন্ডেশনের ক্রেডিট হোলসেলিং কার্যক্রম এবং প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় অংশীদার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশের প্রায় ১১ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ সুবিধাভোগী নারী-উদ্যোক্তা। ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্রেডিট হোলসেলিং মডেল ব্যবহার করে ২ হাজার ১৮৬জন এমএসএমই উদ্যোক্তার মাঝে প্রায় ১২২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০২০ সালে কোভিড ১৯ মহামারির আগ্রাসনে বাংলাদেশের শিল্প খাত, বিশেষতঃ কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের অগ্রযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ফাউন্ডেশন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ে ৩১৩২জন উদ্যোক্তার অনুকূলে প্রায় ৩০৫ (তিনশত পাঁচ) কোটি টাকা বিতরণ করে। পরবর্তীতে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব তহবিল এবং উদ্যোক্তাদের পরিশোধকৃত ঋণের অর্থে গঠিত ‘রিভলভিং তহবিল’ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩০১২জন উদ্যোক্তার অনুকূলে প্রায় ২৯৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। তৃতীয় দফায় ৪৫০ কোটি টাকা রিভলভিং তহবিল থেকে ২৭৭২জন উদ্যোক্তার মাঝে ৩২০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
এসএমইএ ফাউন্ডেশন জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯ শতাংশ-এর বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই)। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় ৩ কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০ শতাংশ-ই নারী-উদ্যোক্তা।