টাঙ্গাইল: মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহা. তৌহিদুল ইসলামের সই করা পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন ইএসআরএম বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন ঘোষ ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাদিক ইকবাল। এছাড়া, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রায়হান আহমেদ শান্তকে পাঁচ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত লঘু অপরাধে চার সেমিস্টার বহিষ্কৃত সাত শিক্ষার্থী হচ্ছেন- রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. যোবায়ের দৌলা (রিয়ন) ও রানা বাপ্পি; গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত আহমেদ শুভ্র এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ সরকার উৎস ও মো. আবিদ হাসান (মারুফ); অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেকুজ্জামান নোমান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান।
তিন সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কৃত সাতজন হচ্ছেন- অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুজন মিয়া ও শিক্ষাবর্ষ ২০২০-২১ এর শিক্ষার্থী মো. নাঈম রেজা, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান, সিপিএস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ রাজু ও ইমরানুল ইসলাম, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রিফাত হোসেন এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (অন্তর)।
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গতবছরের ১৭ আগস্ট দাখিলকৃত অভিযোগপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম শৃঙ্খলা বোর্ড সভা তাদের বহিষ্কারে সুপারিশ করে। ২৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ২৫০তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে আজীবন, একজনকে পাঁচ সেমিস্টার, সাতজনকে চার সেমিস্টার ও সাতজনকে তিন সেমিস্টার করে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। বাকি ১৫ জনকে তাদের অপরাধের ধরণ ও গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়। তাদের বহিষ্কারাদেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’