রংপুর: জেলার তারাগঞ্জ উপজেলায় পাঁচ মাস বয়সী এক মেয়ে শিশুকে জবাই করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে শিশুটির মা তুলশী রানী, বাবা বাবু লাল রায় এবং দাদী পাতানি রানীকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
তারাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ ফারুখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিহত শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পলাশবাড়ি গ্রামের বাবু লাল রায়ের বাড়িতে রোববার দিবাগত রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সোমবার সকালে এলাকাবাসী শিশুটির মরদেহ ঘরে পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে শিশুটির মা, বাবা ও দাদিকে আটক করে।
স্থানীয়রা জানান, তুলশী রানীর আগে থেকেই একটি মেয়ে সন্তান ছিল। এবার তিনি ছেলে সন্তানের প্রত্যাশা করছিলেন, কিন্তু মেয়ে হওয়ায় তিনি ও বাবু লাল রায় নাখোশ ছিলেন। স্বজনদের অভিযোগ, এই অসন্তুষ্টি থেকেই পরিকল্পিতভাবে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তুলশী রানী উন্মাদের মতো আচরণ করছিলেন, যা স্থানীয়দের মতে নিজেকে বাঁচানোর কৌশল হতে পারে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, আটক তিনজনই হত্যার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি।
এদিকে, এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। একজন প্রতিবেশী বলেন, ‘এতো ছোট একটা শিশুকে এভাবে মারা! এটা মানুষের কাজ হতে পারে না।’ স্থানীয়রা দাবি করছেন, শিশুটির মা-বাবা এবং দাদী পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
ওসি এম এ ফারুখ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করেছি। তদন্ত চলছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।