ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ৫ দফা গণদাবি ঘোষণা করেছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এই দাবিগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের সামনে আজ পাঁচ দফা গণদাবি ঘোষণা করছি, যাতে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়।’
জামায়াতের ঘোষিত ৫ দফা গণদাবি:
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন।
২. জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি (Proportional Representation) চালু।
৩. অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতা জানান, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে এ দাবিগুলো বাস্তবায়ন অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে নতুন রাজনৈতিক যাত্রাপথে এগিয়ে নিতে হলে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হয়। সেই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতেই বৈধতা অর্জন করেছে। তবে এখনো অনেক কাঠামোগত সংস্কার বাকি রয়েছে, যা বাস্তবায়ন না হলে আন্দোলনের বিকল্প নেই।
তাই দাবিগুলো আদায়ে জামায়াত তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—
- ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল
- ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ
- ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল
ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা চাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে। তবে নির্বাচনের আগেই আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান যেন ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়, সেজন্য জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।