পাবনা: ভারতের নাগরিক হয়েও পাবনা সদর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও জালিয়াতি করে শ্বশুরের নামে লিজ নেওয়া সরকারি সম্পত্তি দখলেরও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এ বিষয়ে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট আমজাদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ভারতীয় জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লি, ৪৬৭ এলাকার নির্মল কুমারের ছেলে। তবে পাবনা শহরের ২ ওয়ার্ডের বাসিন্দাও তিনি। সুখরঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার ০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলাদেশ সরকারের চাকরিবিধি উপেক্ষা করেই প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। অথচ তিনি ভারতের নাগরিক। সেখানে জমিজমা কিনেছেন। ফ্লাট বাড়িও করেছেন। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতেই থাকেন। ছোট ছেলে বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাতা পান। এ জন্য তাকে নিয়ে পাবনাতে থাকেন। মাঝেমধ্যে ১৫ দিন/একমাস ছুটি নিয়ে তারা ভারতে যান। সুখ রঞ্জনের শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে সরকারি লিজ নেওয়া সম্পত্তি জালিয়াতি করে নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আমার বাবা শহরের মুরগি পট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে বসবাস করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার মায়ের নামে লিজ দেওয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে শুধুমাত্র আমার বোনকে একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছে। এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছে। আমার বাড়িতে বসবাস করে এখন আমাকেই বাড়ি ছাড়া করতে চায়।’
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতিমধ্যেই আমি সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবো এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এইসব কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা ওর ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা আসেনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমার সব ডকুমেন্টস আছে। আমার শ্যালক সুমন কুমার রায়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত জমি জমা নিয়ে বিরোধের জেরে এই ষড়যন্ত্র করছে।’