ঢাকা: গ্রাম আদালতে ছোটখাটো অভিযোগ নিষ্পত্তি হলে মামলার চাপ অনেকটাই কমবে। এতে মানুষ স্বল্প সময়ে ও সহজে বিচার পাবে। একইসঙ্গে মামলাজটও হ্রাস পাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত ‘গ্রাম আদালতব্যবস্থা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করা হয় জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায়।
বক্তারা জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে ভিলেজ কোর্ট অ্যাক্ট কার্যকর থাকলেও তা দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিল না। ২০০৬ সালে সংশোধনীর পর থেকে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালে আইনটি যুগোপযোগী করে নতুন সংশোধনী আনা হয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। দেশের ৬১ জেলায় গ্রাম আদালত সক্রিয় আছে এবং ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার মামলা এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।
বক্তারা জানান, ২০২৮ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সরকার এই কার্যক্রম চালু রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় বলা হয়, গ্রাম আদালত প্রচলিত আদালতের মতো স্থায়ী নয়; বরং প্রতিটি অভিযোগের ভিত্তিতে কেস বাই কেস আদালত গঠন হয়। এর ফলে দ্রুত সমাধান সম্ভব হয়।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, গ্রাম আদালত ও স্থানীয় সালিসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে অনেক সময় তা মিশে যায়। তাই এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জাতীয় পরিচালক সুরাইয়া আখতার জাহান উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় প্রকল্প সমন্বয়ক বিভাষ চক্রবর্তী। লিগ্যাল অ্যানালিস্ট অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান চৌধুরী গ্রাম আদালত আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মাহফুজা আক্তার, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব খোন্দকার মো. নাজমুল হুদা শামিম ও ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি হাসান জাবেদ। ইউএনডিপির সিনিয়র গভর্ন্যান্স স্পেশালিস্ট তানভীর মাহমুদও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হলে বিচারপ্রার্থীদের সময়, অর্থ বাঁচবে এবং সামাজিক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন থাকবে।’